তাওবা। মানবজীবনের একটি অত্যাবশ্যকীয় ও অপরিহার্য বিষয়। পরকালীন শাস্তির প্রধান নিয়ামক হলো গুনাহমুক্ত জীবন। কিন্তু এটা চিরসত্য, পৃথিবীতে নবী-রাসূল ব্যতীত কেউই পাপমুক্ত নয়। তাই যারা পরকালে মুক্তি ও শান্তি লাভের আশা করে, তাদের জন্য তাওবাই হলো মুক্তি ও শান্তির একমাত্র পথ। কারণ, বিশেষত কবিরা গুনাহ (বড় পাপ) তাওবা ছাড়া কখনো মাফ হয় না। তাওবার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর অনুগ্রহ ও ক্ষমা লাভ করতে পারে। তবে এর সঠিক নিয়ম জানা আবশ্যক। অন্যথায় তাওবা কবুল নাও হতে পারে। তাই আমাদের উচিত তাওবার গুরুত্ব ও সঠিক নিয়ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা। যাতে আমরা আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সাফল্যের পথ খুঁজে পাই।
তাওবার সঠিক নিয়ম
- বেশি বেশি ইসতিগফারের মাধ্যমে তাওবা করা। কারণ, ইস্তিগফার আল্লাহ তায়ালার রহমতকে বান্দার প্রতি অবধারিত করে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবি সালেহ আলাইহিস সালাম এর জবানে বলেন, “যদি তোমরা ইস্তিগফার করো, তাহলে হয়তো তোমাদের উপর রহম করা হবে।”
- গুনাহ পরিত্যাগের কঠোর সংকল্প নিয়ে তাওবা করা। উদাহরণস্বরূপ, কোন ব্যক্তি মানুষের গীবত করে তাহলে সে গীবত পরিত্যাগের মাধ্যমে তাওবা করবে। কোন ব্যক্তি নিষিদ্ধ বিষয় শ্রবন করে, তাহলে সে নিষিদ্ধ বিষয় শ্রবন করা থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাওবা করবে ।
- গুনাহ যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো হক সংশ্লিষ্ট হয়, তাহলে তার হক ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাওবা করতে হবে। নতুবা তাওবা কবুল হবে না। আর গুনাহ যদি আল্লাহর হক সম্পৃক্ত হয়, তাহলে গোনাহ পরিত্যাগের মাধ্যমে তাওবা করবে।
- আল্লাহ তায়ালা কোন কোন গুনাহের জন্য কাযা ও কাফফারা আবশ্যক করেছেন সেগুলোর কাযা ও কাফফারা আদায় করা। পাশাপাশি নিষ্ঠার সাথে তাওবা করা এবং স্বীয় কৃতকর্মের উপর লজ্জিত হওয়া এবং বেশি বেশি নেক আমল করা। রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা মন্দ কাজের পর বেশি বেশি নেক আমল করো। কারণ, নেক কাজ মন্দ কাজকে মিটিয়ে দেয়।
তাওবা কবুল হওয়ার আলামত
এমন কিছু আলামত রয়েছে যেগুলো তাওবা কবুল হওয়ার প্রমাণ বহন করে। যেমন, তওবা পরবর্তী অবস্থা পূর্বের চেয়ে উত্তম অনুভূত হওয়া। আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত হওয়া। আল্লাহর আনুগত্যের উপর অটল থাকা। মৃত্যু পর্যন্ত তাওবার উপর অবিচল থাকা ।