কলকাতার ঐতিহ্যবাহী আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বর্তমানে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার জেরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কারণ, এ হাসপাতালেই কয়েকদিন আগে এক নারী চিকিৎসককে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। যা নিয়ে এখন উত্তাল কলকাতা। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সম্প্রতি তদন্তে হাসপাতালটির আর্থিক অনিয়ম ও চিকিৎসা বর্জ্য পাচারের মতো গুরুতর অপরাধের বিষয় উঠে এসেছে।
ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের তদন্ত করতে গিয়ে আরও একটি আশঙ্কাজনক চক্রের সন্ধান পেয়েছে। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য পাচারের সঙ্গে বাংলাদেশি চক্রের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশ থেকে আসা দুই ব্যক্তির বারবার কলকাতা যাতায়াতের তথ্য উঠে এসেছে। যারা হাসপাতালের বিতর্কিত সাবেক প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সন্দীপ ঘোষ বর্তমানে আর্থিক অনিয়মের মামলায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
তদন্তে আরও জানা যায়, এই দুই ব্যক্তি হাসপাতালের বর্জ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্রি করেছেন। যদিও সিবিআই এই দুই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। তবে তাঁদের সঙ্গে হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন যে, এই দুই ব্যক্তি প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। যিনি সাবেক প্রিন্সিপালের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। প্রসূন আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে নিয়োজিত থাকলেও তাঁর সংশ্লিষ্টতা আর জি কর হাসপাতালে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির সঙ্গেও পাওয়া গেছে।
নিয়মানুযায়ী বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিষ্পত্তি করতে হয়। যাতে এগুলো পুনরায় ব্যবহারের কোনো সুযোগ না থাকে। কিন্তু আর জি কর হাসপাতাল থেকে স্যালাইনের বোতল, ইনজেকশন সিরিঞ্জ, সুচ ইত্যাদি সরঞ্জাম বাজারে বিক্রি করা হয়েছিল।
সিবিআইয়ের তদন্তে আরও দেখা যায়, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্পত্তির রেকর্ড রাখার বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও আর জি কর হাসপাতাল সেই নিয়ম যথাযথভাবে অনুসরণ করত না। একই সময়ে অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের তুলনায় তাঁদের বর্জ্যের পরিমাণ আশ্চর্যজনকভাবে কম রিপোর্ট করা হয়েছে, যা স্পষ্টতই আর্থিক অনিয়ম ও পাচারের প্রমাণ দেয়। এই ঘটনার পর হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রমের উপর প্রশ্ন উঠেছে এবং আরও গভীর তদন্তের দাবি জানানো হচ্ছে।
ডেস্ক রিপোর্ট
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link