নিউজনেস্ট

রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাস

বীরগঞ্জে যুবককে গোডাউনে আটকে রেখে পিটিয়ে হত্যা
ছবি: আমাদ পোর্টাল

বর্তমানে আমেরিকা বিরোধী পক্ষের শক্তিশালী দুটি রাষ্ট্র হলো রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া। সোভিয়েত আমল থেকেই দেশদুটির মধ্যে রয়েছে মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। সময়ের পরিবর্তনে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলেও এর প্রভাব পড়েনি মস্কো পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। বরং দিন যত গড়িয়েছে, দেশ দুটি পার করেছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা মাত্রা। বিশেষত ভ্লাদিমির পুতিনের সময়ে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক স্পর্শ করেছে এক অনন্য উচ্চতা। বিগত বছরগুলোয় দুই দেশের কূটনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে হালকা নজর বুলালেই যা স্পষ্ট বুঝে আসে।

২০০০ সালের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার রাষ্ট্রপতির প্রথম মেয়াদের প্রথম বছরেই উত্তর কোরিয়া সফর করেন। এবং উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কিম জং ইলের সাথে দেখা করেন।

২০০৬-২০১৭ সালের বছরগুলোতে রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি উন্নয়নের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনাগুলোকে সমর্থন করে উত্তর কোরিয়াকে শক্তিশালী অস্ত্র সরবরাহের উপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও, এই দশ বছরে রাশিয়ার সাথে উত্তর কোরিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উল্ল্যেখযোগ্য শীতল হয়নি।

২০১৯ সালের এপ্রিলে রাশিয়ার উপকূলীয় এলাকা ভ্লাদিভোস্তকে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সাথে সর্বপ্রথম বড় পরিসরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণকে সমর্থন করে। এবং পুর্ব ইউরোপে এমন সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পিছনে আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতিকে দায়ী করে। ফলাফলস্বরূপ রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসা একটি বিপদের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করে।

২০২২ সালের মে মাসে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে উত্তর কোরিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা অনুমদোনের জন্য নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত মার্কিন খসড়া প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দিয়ে দেয়।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে গিয়ে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় গিয়ে পৌঁছায়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী উত্তর কোরিয়ার তৈরি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াচে অংশ নেন। এর পরের মাসেই পুতিনের সাথে বৈঠকের উদ্দ্যেশ্যে কিম জং উন রাশিয়া সফর করেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে আমেরিকা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়াকে ইউক্রেনে ব্যবহার করার জন্য এক হাজারেরও বেশি অস্ত্রভর্তি কন্টেইনার সরবরাহের অভিযোগ করে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তর কোরিয়া নিজেদের প্রথম গুপ্তচর স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়া এ ব্যাপারে উত্তর কোরিয়াকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করেছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারীতে যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় অভিযোগ করে, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার বানানো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে।

২০২৪ সালের মার্চে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত জাতিসংঘের কমিটি নতুন করে গঠনের প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দেয়।

২০২৪ সালের মে মাসে উত্তর কোরিয়া অস্ত্র সরবরাহের কারণে রাশিয়ার বিভিন্ন সংস্থার উপর আরোপ করে আমেরিকা ও ব্রিটেন।

২০২৪ সালের জুনে রাশিয়া উত্তর কোরিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া সফর করেন। পুতিনের এই সফরে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত