সম্প্রতি ইসরায়েলি সংবাদ সংস্থা চ্যানেল ফোর্টিন জানিয়েছে, ইসরায়েল অতি দ্রুত গাজার উত্তর সীমান্তকে প্রধান যুদ্ধফ্রন্ট হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
চ্যানেলটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ রাতে গাজা সীমান্ত থেকে উত্তর সীমান্তে ইসরায়েলের সামরিক ও নিরাপত্তা ভার স্থানান্তর করা হতে পারে। খবরটি এমন সময়ে এলো, যখন লেবাননে তারবিহীন যোগাযোগ যন্ত্র ‘পেজার’ বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহর ইসরায়েল থেকে ‘ন্যায্য প্রতিশোধ’ নেয়ার হুমকি দিয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সংবাদপত্র ‘ইসরায়েল আলইয়াওম’ নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্রে জানিয়েছে, ‘হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলি বাহিনীর উত্তেজনা দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। পরিস্থিতি যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনাও ক্রমশ বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ মুহূর্তে উত্তর সীমান্তে থাকা সমস্ত ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হতে পারে ।
উল্লেখ্য, গতকাল লেবাননে তারবিহীন যোগাযোগ যন্ত্র ‘পেজার’ বিস্ফোরণ ঘটায় ইসরায়েল। এতে ৯জন নিহত হওয়ার সাথে আহত হয়েছে ২৭৫০ জন। লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আলবাইত জানিয়েছেন, হামলায় আহতদের মধ্যে ২০০ জনের অবস্থা বেশ গুরুতর।
লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকি দিয়েছে। ফলে এ ঘটনার পর ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে হিজবুল্লাহর দুইজন সামরিক কর্মকর্তা আলজাজিরাকে জানান, লেবাননে যোগাযোগ ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ইসরায়েলের এই হামলা দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণের প্রস্তুতি হতে পারে বলে তারা মনে করেন। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এই হামলার প্রসঙ্গে যুদ্ধ বিশ্লেষক কর্নেল হাতেম আলফালাহি বলেন, এই ধরনের হামলা ইসরায়েলের দক্ষিণ লেবানন আক্রমণ করতে চাওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। কারণ, তারা এমন একটি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে হামলার প্রধান টার্গেট বানিয়েছে, যা যুদ্ধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফালাহি আরও বলেন, যুদ্ধে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হলে তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটায়। বিশেষ করে হিজবুল্লাহর স্বতন্ত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা লক্ষ্যবস্তু হওয়ায় বিষয়টি এখন সম্পূর্ণরূপে একটি নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে সামরিক বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার এলিয়াস হানা বলেন, নাজুক এই সময়ে এ ধরনের বিস্ফোরণ লেবানন-ইসরায়েল সংঘাতকে নতুন এক পর্যায়ে নিয়ে যাবে।