নিউজনেস্ট

হাজারখানেক টাকার চাকরি যখন আলাদিনের প্রদীপ 

হাজারখানেক টাকার চাকরি যখন আলাদিনের প্রদীপ
ছবি: সংগৃহীত

২০১৯ সালে মাত্র ৫১ হাজার টাকা বেতনে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন গাজী হাফিজুর রহমান লিকু। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব-২ পদে পদোন্নতি পান। এ পদে উন্নীত হওয়ার পরই যেন বদলে যায় তার ভাগ্যাকাশ। বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে  হয়ে উঠেন বিত্তশালী। নামমাত্র বেতনে চাকরি শুরু করেও গড়ে তোলেন শত কোটি টাকার সম্পদ। সম্প্রতি, দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার নামে বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয়কর রিটার্নে লিকুর বেতন উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র ৬৭ হাজার ১০ টাকা। তবে অভিযোগ আছে সরকারি চাকরি পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন দূর্নীতি আর অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। রাজধানীতে একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট এবং বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিক স্পেস,  গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্ত্রীর নামে ৪৭০ শতক জমিতে এগ্রো ফার্মের পাশাপাশি, কোটালীপাড়ায় রয়েছে ৪শ’ বিঘা জমির উপর মাছের ঘের। কুয়াকাটায় লিকুর ভাইয়ের নামে রয়েছে একটি রিসোর্টও। গোপালগঞ্জে ১০তলা ভবনসহ মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, আদাবরের মতো অভিজাত এলাকায় গড়েছেন একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট এবং বাড়ি।

দূর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে আরও জানা যায়, বিদেশে পাচার করেছেন লিকু বিপুল পরিমাণ সম্পদ। আলোচনায় এসেছে তার বন্ধুর মাধ্যমে দুবাইয়ে অর্থ পাচারের বিষয়টিও।

একের পর এক জমি ক্রয়

দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, লিকু তার বিভিন্ন সম্পদ ক্রয়ে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে দলিলমূল্য কম দেখাতেন। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনে সেখানে নির্মাণ করেন বেনামি বাড়ি ও কমার্শিয়াল টাওয়ার। তার শ্যালকের নামে গোপালগঞ্জে একটি ১০তলা কমার্শিয়াল আবাসিক ভবন নির্মাণের কথাও উঠে এসেছে দুদকের রিপোর্টে।

শুধু সম্পত্তি নয়, পরিবহন খাতে ছিল বিপুল বিনিয়োগ

শুধু সম্পত্তি নয়, পরিবহন খাতেও লিকুর বিপুল বিনিয়োগের তথ্য পাওয়া গেছে। গোপালগঞ্জ-ঢাকা-খুলনা রুটে তার নামে ৪২টি যাত্রীবাহী বাস রয়েছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি ৭টি বাস বিক্রি করেছেন তিনি। এছাড়াও ঢাকা মহানগরে চলাচলকারী ‘ওয়েলকাম এক্সপ্রেস’ বাস সার্ভিসেও তার শেয়ার রয়েছে।

অবস্থান অজানা, তদন্ত অব্যাহত

গাজী হাফিজুর রহমান লিকুকে ২০২৩ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি ওমরাহ করতে যান এবং বর্তমানে দেশে ফিরে আসেননি। তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে পাওয়া যায়নি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য।

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত