আমাদের জীবনযাত্রা জুড়ে রয়েছে পরিচিত অনেক মুখ- সহপাঠী, সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশী। ইসলাম ধর্মে প্রতিবেশীর প্রতি সদ্ব্যবহার ও সম্মান প্রদর্শনকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। এমনকি ঈমানের সাথে প্রতিবেশীর প্রতি সদাচরণের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং কেয়ামতের দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।’ অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে তার প্রতিবেশীর নিকট সর্বোত্তম।’
প্রতিবেশীর অধিকারগুলো পরিপূর্ণভাবে পালনের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রিয় বান্দায় পরিণত হতে পারি। প্রতিবেশীর অধিকারের মধ্যে রয়েছে, তাদের বিপদে সাহায্য করা, অসুস্থ অবস্থায় খোঁজ-খবর নেওয়া, দুঃখ-কষ্ট ভাগাভাগি করা, প্রতিবেশীর প্রতি সদয় আচরণের একটি উদাহরণ হল, যদি ঘরে ভালো খাবার রান্না হয়, তবে অল্প হলেও তা প্রতিবেশীর সাথে ভাগ করে নেওয়া।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যদি তুমি তরকারি রান্না কর, তবে তাতে একটু বেশি করে পানি যোগ কর এবং তোমার প্রতিবেশীদের তা দাও।’ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই বাণী আমাদের শেখায়, দান বা যেকোন উপকার, ছোট-বড় না ভেবে আন্তরিকতার সাথে করতে হবে।
প্রতিবেশীর জন্য দোয়া করা, তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা এবং সালাম দেওয়ার মাধ্যমে সম্পর্ককে সুদৃঢ় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যের দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন।’
প্রতিবেশীর প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান দেখানো, তাদের সাথে অহংকার না করা, উচ্চস্বরে তাদের বিরক্ত না করা এবং ধৈর্যের সাথে তাদের সাথে ভালো আচরণ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ভালো এবং মন্দ এক সমান নয়। মন্দকে উত্তম দ্বারা প্রতিহত কর।’ (সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩৪)
প্রতিবেশীর অধিকার নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, যদি সে তোমার কাছ থেকে ধার চায় তুমি তাকে ধার দাও। অসুস্থ হলে তার খোঁজ খবর নাও। এবং মারা গেলে তার জানাজায় অংশগ্রহণ কর।
তাই আসুন, আমরা প্রতিবেশীর প্রতি সদাচরণ ও অধিকার পালনের মাধ্যমে আমাদের সমাজকে সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল করে তুলি।