নিউজনেস্ট

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা। ছবি : আল আরাবি আল জাদিদ

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী গতকাল তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা ‘বৈরুতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।’ এই হামলার ফলে লেবাননের রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, এ হামলার পরও ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ হামলার নির্দেশনায় এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

গত কয়েকদিন ধরে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা এবং সামরিক কার্যক্রম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা গোটা অঞ্চলে উত্তেজনার মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলি বিমান হামলাটি এই সংঘর্ষেরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই হামলার ফলাফল এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি।

এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তরফ থেকে লেবাননের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা দ্রুত উত্তেজনা প্রশমন করে এবং সংঘাত আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়া রোধ করে। বিশেষ করে সম্প্রতি বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে দুটি বড় বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। বিস্ফোরণগুলোকে আন্তর্জাতিক মহলে ‘মঙ্গলবার ও বুধবারের গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যু এবং ২৯৩১ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গত ৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতের পরিধি সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সাইবার আক্রমণের পর থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েল-হিযবুল্লাহর যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। তবে তিনি প্রতিশোধ নেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি। তিনি এই বিস্ফোরণগুলোকে ‘লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলনের ইতিহাসে নজিরবিহীন এক মানবিক ও নিরাপত্তা আঘাত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরও বলেছেন, লেবানন ফিলিস্তিন যুদ্ধে তার সহায়ক ভূমিকা পালন করতে থাকবে, এবং এই ভূমিকা গাজার যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

দখলদার ইসরায়েলির বিমান হামলার ফলে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে যে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা গোটা লেবাননজুড়ে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শান্তির আহ্বান সত্ত্বেও লেবাননের পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে এই যুদ্ধের শেষ কোথায়, তা এখনই বলা কঠিন। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত, এই যুদ্ধ শুধু লেবাননের রাজনৈতিক ক্ষেত্র নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গভীর প্রভাব ফেলবে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত