নিউজনেস্ট

গত ২ মাসে গণপিটুনিতে ৩৩ জনের মৃত্যু, থামছে না সহিংস প্রবণতা

ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর, গত দুই মাসে দেশে মব জাস্টিস, লিঞ্চিং বা গণপিটুনির ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৩ জন। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)-এর এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং মানবিক মূল্যবোধের ঘাটতির কারণেই এ ধরনের সহিংস প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে, সম্প্রতি ঢাবিতে মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেন এবং জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শুধু চুরির অপবাদ নয়, রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরোধিতা কিংবা ধর্ম অবমাননার অভিযোগেও অনেক সময় নিরীহ মানুষ গণহারে হামলার শিকার হচ্ছেন। এমনকি শিক্ষক ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরাও রোষানলের শিকার হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন গণপিটুনির এই প্রবণতাকে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘আইনের শাসনের অভাব এবং বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে এ ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি নাগরিকদের মানবিক মূল্যবোধের ঘাটতি এবং সহিংসতার প্রতি এক ধরনের প্রবণতাও দায়ী।’

এদিকে, মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী নূর খান লিটন বলেন, ‘পুলিশ এখনও দৃঢ়ভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। জনগণের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা একেবারে শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে অপরাধীরা।’

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মব জাস্টিস বা গণপিটুনির প্রবণতা থামাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তিশালী ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। মব সহিংসতায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং সামাজিকভাবে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকর ভূমিকা এবং বিচার প্রক্রিয়ায় দৃঢ়তা অত্যন্ত জরুরি বলে তারা মনে করেন।’

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত