সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস করেছে। যেখানে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান দাবি করে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে আগামী ১২ মাসের মধ্যে অবৈধ দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে সরে যেতে হবে। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১২৪টি দেশের সমর্থন নিয়ে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে।
প্রস্তাবে ইসরায়েলি বাহিনীকে অবিলম্বে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড থেকে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া নতুন করে বসতি স্থাপন বন্ধ করা, অবৈধভাবে দখলকৃত সম্পত্তি ও জমি ফিরিয়ে দেওয়া এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবটিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রতি অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকতে হবে। যদি ধারণা করা যায় ওই অস্ত্র ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অবৈধ দখলদারিত্ব ধরে রাখতে ব্যবহার হতে পারে, তাহলে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই প্রস্তাবের প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থনও উল্লেখযোগ্য। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন পাওয়া ফিলিস্তিনের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এটি ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি বড় মাইলফলক।’
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইসরায়েলের বেআইনি দখলদারিত্বের অবসানে জাতিসংঘের এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) এই সিদ্ধান্তকে ফিলিস্তিনিদের ভূমি পুনরুদ্ধার-অধিকারের স্বীকৃতি বলে অভিহিত করেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জাতিসংঘের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করে বলেছে এই প্রস্তাব ইসরায়েলকে অবৈধ দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়, যা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে একটি বড় পদক্ষেপ।’
জাতিসংঘের এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হচ্ছে। যদিও এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং মানবাধিকারের প্রতি বৈশ্বিক অঙ্গীকার ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকার এবং স্বাধীনতার স্বপ্নকে আরও এক ধাপ কাছে নিয়ে যেতে পারবে বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে।
সূত্র : আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link