নিউজনেস্ট

তৈরি পোশাক খাতের চলমান সঙ্কটের আড়ালে চলছে গোপন ষড়যন্ত্র 

তৈরি পোশাক খাতের চলমান সঙ্কটের আড়ালে চলছে গোপন ষড়যন্ত্র
চলমান শ্রমিক আন্দোলন। ছবি: ঢাকা পোস্ট

তৈরি পোশাকঙ্কট সমাধানে শিল্প খাতে চলমান অস্থিরতা ও শ্রমিকদের ১৮দফা দাবির ভেতর মজুরি এবং বার্ষিক আয় (ইনক্রিমেন্ট) ১০ শতাংশ হারে বাড়ানোর দাবি কোন অবস্থাতেই না মানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি’ (বিজিএমইএ)।

গতকাল সোমবার ২৩শে সেপ্টেম্বর উত্তরায় সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরী সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জরুরী সভায় বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন করে মজুরি বৃদ্ধি এবং ১০ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া নিয়ে কোন আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এ সময় ১৮দফা নিয়ে শ্রমিকরা যে আন্দোলন করছে তার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম।

সভায় একই রকম অভিযোগ করেন প্যাট্রিয়ট গ্রুপের মালিক ইমরান। তিনি বলেন, ‘গত ডিসেম্বর ২০২৩শে নতুন মজুরি হার বাস্তাবায়ন করেছি। নতুন বেতন, বোনাস চালু করেছি। সরকার বদল হওয়ায় ৯ মাস পরই কেন আবার মজুরি বাড়ানো হবে? এখন যে নতুন দাবি করা হচ্ছে তা মূলত আমাদের বিপদে ফেলার জন্য। দেশের গার্মেন্টস খাতে কালো ছায়া দেখা যাচ্ছে।’

এদিকে বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি রেদওয়ান আহমেদ শ্রমিকদের এই আন্দোলনের পেছনে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে ইন্ধনদাতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘সমস্যা তো সামলানো গেছিলো। এখন নজরুলরা কোটি কোটি টাকা ঢেলে সমস্যাকে আবার বাড়িয়ে তুলছেন।’

উল্লেখ্য, শ্রমিকদের ১৮ দফা হলো:

১. মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি পুননির্ধারণ

২. যে সকল কারখানায় ২০২৩সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরি কার্যকর করা হয়নি সেখানে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩. শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে।

৪. ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি বা চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ দিতে হবে। এবং এর সাথে সাংঘর্ষিক আইনি ধারাকে সংশোধন করতে হবে।

৫. সকল প্রকার বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।

৬. হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা, টিফিন বিল ৫০টাকা, নাইট বিল ১০০টাকা করতে হবে।

৭. সকল কারখানায় প্রফিডেন্ট ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৮. নূন্যতম ১০ শতাংশ বেতনের বিপরীতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট করতে হবে।          

৯. শ্রমিকদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে কারখানায় প্রবেশাধিকার বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত থাকবে না। এটাকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

১১. সকল প্রকার রাজনৈতিক এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

১২. ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৩. কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নারী-পুরুষ সমান হারে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

১৪. জুলাই বিপ্লবে ‘শহিদ’ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

১৫. রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৬. শ্রম আইন অনুযায়ী সকল কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে।

১৭. অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে

১৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত