সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে এনবিসি নিউজ-এর সাংবাদিক কিয়ার সিমন্সের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রজব তাইয়েব এরদোয়ান হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত না করার কারণ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, হামাস একটি ‘প্রতিরোধ আন্দোলন’। যারা তাদের ভূমি রক্ষার জন্য সংগ্রাম করছে। এছাড়া সাক্ষাৎকারে এরদোয়ান গাজার উপর ইসরায়েলের চালানো হামলাগুলোর নিন্দা জানান এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।
এরদোয়ান বলেন, ‘আমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু একজন নেতা হিসেবে আমি হামাসকে ভালোভাবে জানি। হামাসকে কখনোই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করিনি এবং এখনও করি না।’ তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ‘হামাস একটি প্রতিরোধ আন্দোলনের নাম। তাছাড়া যে প্রতিরোধ সংগঠন তাদের ভূমি রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে তাদের আমি কিভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন বলবো?’
এরদোয়ান আরও স্মরণ করিয়ে দেন যে, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবরের আগে থেকেই ফিলিস্তিনি জনগণ দীর্ঘ সময় ধরে কষ্টের মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, যে দুর্ভোগ ফিলিস্তিনি জনগণ বহন করেছে, তা ৭ই অক্টোবরের ঘটনা দিয়ে বিচার করা যাবে না। ফিলিস্তিন ১৯৪৭ সাল থেকে ধীরে ধীরে তার ভূমি হারিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি গাজার ওপর ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলারও কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৭,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে। যার বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। সেই সাথে মারাত্মক দুর্ভিক্ষের পাশাপাশি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে গোটা অঞ্চলটি।
সাক্ষাৎকারের অন্য একটি অংশে এরদোয়ান ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়েও তুরস্কের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, ‘তুরস্ক ন্যাটোর সব সদস্য দেশের পদক্ষেপ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর অন্যান্য দেশ ইউক্রেনকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। কিন্তু এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আবেগপ্রবণতার সাথে নয়, বরং বাস্তবতার ভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত।’
এরদোয়ান বলেন, ‘ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান রাশিয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে একটি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পেছনের অন্যতম কারণও এই হুমকি।’
সূত্র: টিআরটি অ্যারাবিক