ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আজ বুধবার এক বিবৃতিতে লেবাননে স্থল অভিযানের কথা জানিয়েছে। এর আগে ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হতাহত করেছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে তারা ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে তেলআবিবের উপকণ্ঠে মোসাদের সদর দফতর এবং হাইফার দক্ষিণে বিস্ফোরকদ্রব্য উৎপাদনকারী একটি ইসরায়েলি কারখানা।
ইসরায়েলি সেনাপ্রধান হেরতসি হালেভি বলেছেন, ‘আমাদের বিমান বাহিনী লেবাননে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে এবং স্থল অভিযানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, ‘ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য হলো, উত্তরের বাসিন্দাদের নিরাপদে ঘরে ফিরিয়ে আনা। ইসরায়েলি বাহিনী হিজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষ করে ইতোমধ্যে যেসব এলাকা হিজবুল্লাহর সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে।’
ইসরায়েল এরই মধ্যে লেবানন সীমান্তে দুইটি রিজার্ভ ব্রিগেড পাঠিয়েছে। এতে আক্রমণ আরও তীব্র হওয়ার পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম হবে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ উসামা খালেদ বলেছেন, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের অর্থ হলো, তারা গাজার ফ্রন্ট থেকে সামরিক মনোযোগ সরিয়ে লেবাননের দিকে নিয়ে গেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব লেবাননের সীমান্তে একটি নিরাপত্তা বেল্ট তৈরি করতে চায়, যা হিজবুল্লাহকে লিটানি নদীর পেছনে সরিয়ে নিয়ে যাবে।
আজ বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবানন এবং বেকা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এছাড়া বৈরুত এবং সাইদার মধ্যবর্তী একটি গ্রামেও প্রথমবারের মতো আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহর ২৮০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপণস্থল এবং অস্ত্রাগার।
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আজকের ইসরায়েলি হামলায় ৫১ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪ জন হিজবুল্লাহর যোদ্ধা রয়েছেন। এই তিনদিনের আক্রমণে মোট নিহতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে এবং দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
এদিকে ইসরায়েলের এই আক্রমণের জবাবে হিজবুল্লাহ আজ উত্তর তেলআবিবে মোসাদের সদর দফতর এবং গ্যালিলিতে ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, মোসাদের সদর দফতরে ‘কাদির-১’ ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই মিসাইলটি ভূপাতিত করেছে।
এছাড়া হিজবুল্লাহ হাইফার দক্ষিণে একটি বিস্ফোরক কারখানা এবং গ্যালিলির বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তারা দাবি করেছে, এই হামলায় ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা অ্যারাবিক