সম্প্রতি হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেড গাজায় ইসরায়েলি নগ্ন আগ্রাসনের এক বিশদ বিবরণ প্রকাশ করেছে। যে বিবরণে বিশদ আকারে তুলে ধরা হয়েছে গাজায় করা ইসরায়েলের প্রতিটি অপরাধ। গাজা যুদ্ধের ৩৪৮তম দিনে প্রকাশিত সেই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিভিন্ন দিকের বিস্তারিত তথ্য ।
গাজার মানুষের উপর চালানো ইসরায়েলের নগ্ন আগ্রাসন
- মোট চালানো গণহত্যা ৩,৫৯৪টি।
- মোট শহিদ ৫১ হাজার ২৭২ জন।
- নিখোঁজ ১০,০০০ হাজার।
- হাসপাতালে পৌঁছা লাশের সংখ্যা ৪১ হাজার ২৭২ (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রদত্ত ৩৪৮ দিনের হিসাব অনুযায়ী)।
- সর্বমোট আহত ও আক্রান্ত ৯৫,৫৫১জন। (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ৩৪৮দিনের হিসেবে)।
- ধ্বংসজ্ঞের এ যুদ্ধে গাজা থেকে বন্দী ৫ হাজার।
শিশুদের উপর আগ্রাসন
- শহিদ শিশু ১৬ হাজার ৮১৪।
- গণহত্যা চলকালীন জন্মগ্রহণ করেই শহিদ হওয়া শিশু ১৭১।
- এক বছরের কম বয়সী শহিদ শিশু ৭১০।
- খাদ্যাভাব ও অনাহারে মৃত্যুর মুখে শিশু ৩,৫০০।
- পিতামাতা উভয়ে অথবা তাদের কোন একজন ছাড়া দিনানিপাত করা শিশু ১৯ হাজার।
নারীদের উপর আগ্রাসন
- শহিদ নারী ১১,৩৯৫ জন।
- অযত্নে স্বাস্থ্যজনিত ঝুঁকিতে গর্ভবতী নারী প্রায় ৬০ হাজার।
- শহিদদের মধ্যে শতকরা ৬৯ জনই নারী ও শিশু।
চিকিৎসা ব্যবস্থায় আগ্রাসন
- সুচিকিৎসার জন্য বাহিরে যাওয়া প্রয়োজন আহত ১২ হাজার মানুষের।
- মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী ১০ হাজার।
- অন্যান্য বিভিন্ন মারাত্মক রোগে আক্রান্ত ৩ হাজার।
- স্থান পরিবর্তনে সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত ১৭ লক্ষ ৩৭,৫২৪ জন।
- স্থান পরিবর্তনে হ্যাপাটিইটিসে আক্রান্ত ৭১,৩৩৮ জন।
- চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে বাধা দেয়ার কারণে দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকিতে ৩ লক্ষ ৫০,০০০ রোগী।
- মেডিকেল টিমের শহিদ সংখ্যা ৯৮৬জন।
- গাজা সিভিল ডিফেন্সের শহিদ ৮৪জন।
- বন্দী চিকিৎসা কর্মী ৩১০জন।
- স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতালের সংখ্যা ৩৪টি।
- স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্লিনিকের সংখ্যা ৮০টি।
- দখলদার ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়া স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৬২টি।
দখলদার ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়া অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ১৩১টি।
গণকবর আবিস্কার
- হাসপাতালের অভ্যন্তরে উদ্ঘাটিত গণকবর ৭টি।
- হাসপাতালের অভ্যন্তরে ৭টি গণকবর থেকে উদ্ধার লাশ ৫২০টি।
খাদ্য আগ্রাসন
- অনাহারে শহিদ ৩৬ জন।
সাংবাদিকদের উপর আগ্রাসন
- শহিদ সাংবাদিক ১৭৩ জন।
- বন্দী প্রসিদ্ধ সাংবাদিক ৩৬জন। অপ্রসিদ্ধ সাংবাদিক অসংখ্য।
শরণার্থীদের উপর আগ্রাসন
- গাজার সমস্ত ক্রসিং বন্ধ ১৩৬ দিন যাবত।
- গাজা উপত্যকায় শরণার্থী সংখ্যা ২ মিলিয়ন।
- জরাজীর্ণ বসবাসের অনুপযুক্ত তাঁবু ১ লাখ।
- শরণার্থী শিবিরে হামলা ১৮০টি।
শিক্ষা ব্যবস্থায় আগ্রাসন
- পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস করা স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ১২৫টি।
- আংশিক ধ্বংস করা স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ৩৩৬টি।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে শহিদ শিক্ষার্থী ১১,৫০০জন।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে শহিদ শিক্ষক ও শিক্ষাসচিব ৭৫০জন।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে শহিদ বিজ্ঞ জ্ঞানতাপস, আলেম ও গবেষক ১১৫জন।
ধর্মীয় স্থাপনায় ইসরায়েলি আগ্রাসন
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে ধ্বংস হওয়া মসজিদ ৬১১টি।
- আংশিক ধ্বংস হওয়া মসজিদ ২১৪টি।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে ধ্বংস হওয়া গির্জা ৩টি।
গাজার অবকাঠামো খাতে ইসরায়েলি আগ্রাসন
- মাত্র বছর ধরে চলা যুদ্ধে দখলদার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বোমা ফেলেছে ৮৩ হাজার টন।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে ধ্বংস হওয়া আবাসন ইউনিট ১ লক্ষ ৫০ হাজার।
- দখলদার ইসরায়েলি হামলায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাওয়া আবাসন ইউনিট ৮০ হাজার।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে আংশিক ধ্বংস হওয়া আবাসন ইউনিট ২ লক্ষ।
- দখলদার ইসরায়েলিদের হাতে প্রশাসনিক ভবন ধ্বংস ২০০টি।
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়া এলাকা ৩,১৩০ কিলোমিটার।
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে পানি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়া এলাকা ৩৩০ কিলোমিটার।
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়া এলাকা ৬৫৫ কিলোমিটার।
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে ধ্বংস হওয়া সড়ক ও মহাসড়ক মিলিয়ে ২,৮৩৫ কিলোমিটার।
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে ধ্বংস হওয়া ক্রীড়া স্টেডিয়ামের সংখ্যা ৩৬টি।
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে ধ্বংস হওয়া জল কূপের সংখ্যা ৭০০টি।
প্রত্নতত্ত স্থাপনায় ইসরায়েলি আগ্রাসন
- দখলদার ইসরায়েলের হাতে ধ্বংস হওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহ্যবাহী স্থানের সংখ্যা ২০৬টি।
চলমান গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে গাজা উপত্যকার প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
সূত্র: আলইলামুল আসকারি
