সম্প্রতি প্রথমবারের মতো তাইওয়ান প্রণালীতে জাপানের একটি যুদ্ধজাহাজকে কেন্দ্র করে সামুদ্রিক এই অঞ্চলে শুরু হয়েছে নতুন এক উত্তেজনা।
জাপানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা এনএইচকে এবং অন্যান্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে গতকাল বুধবার জাপানের একটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করে। আর এ থেকেই সূচনা চীন-জাপানের মধ্যকার নতুন উত্তেজনার ।
যদিও জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। কিন্তু এই পদক্ষেপকে টোকিওর আন্তর্জাতিক জলপথের স্বাধীনতার প্রতি গুরুত্বারোপের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাপানের এই পদক্ষেপটিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ান প্রণালীকে আন্তর্জাতিক নৌপথ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় সামরিক বাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মত একটি পদক্ষেপ হিসেবে ধরা যায়। যদিও এ ধরনের পদক্ষেপ চীনের জন্য উদ্বেগের কারণ এবং উত্তেজনা বৃদ্ধিকারী।
এদিকে উত্তেজনার মধ্যেই আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে নৌ চলাচলের স্বাধীনতার প্রতি কৃত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে টোকিও। বৃহস্পতিবার জাপানের বিভিন্ন গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান প্রণালী আন্তর্জাতিক নৌপথ হিসেবে স্বীকৃত হলেও চীন বরাবরই এ অঞ্চলের উপর নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। চীন মনে করে, এই প্রণালী তাদের অধিকারাধীন। কারণ, প্রণালীটি শুধুমাত্র চীন তাইওয়ানের মাঝ দিয়ে গিয়েছে। যেহেতু চীন তাইওয়ানকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দাবি করে তাই চীন-তাইওয়ানের মধ্যে থাকা প্রণালীটিও চীন নিজের দাবী করে।
চীনের পাল্টা তৎপরতা
জাপানের যুদ্ধজাহাজের এই চলাচলের মধ্যে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা দ্বীপের চারপাশে ৪৩টি চীনা সামরিক বিমান এবং ৮টি চীনা যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছে।
তারা জানায়, এই সামরিক তৎপরতা বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চলমান ছিল। তাইওয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’
বেইজিংয়ের ক্ষোভ ও ওয়াশিংটনের প্রতিক্রিয়া
সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন এবং তার মিত্ররা তাইওয়ান প্রণালীতে তাদের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। প্রায়শই যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে এই জলপথকে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম পথ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান প্রণালীর দৈর্ঘ্য ১৮০ কিলোমিটার এবং এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ। তবে এই ধরনের তৎপরতা বেইজিংয়ের ক্রোধের কারণ হয়ে উঠেছে এবং চীনের সাথে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে জাপানের এই ধরনের কার্যকলাপ চীন-জাপান সম্পর্কের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নতুন কৌশলগত উত্তেজনার সৃষ্টি করছে। এবং ভবিষ্যতে প্রণালীটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা এবং সামরিক উপস্থিতি আরও তীব্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: এএফপি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link