আজ ২৬শে সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সুদানের রাজধানী খার্তুম পুনরুদ্ধার করতে তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে সুদানের সেনাবাহিনী। সামরিক সূত্রগুলোর মতে, প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের দখলকৃত এলাকাগুলোতে এ আক্রমণটি গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড়।
এ ব্যাপারে খার্তুমে কর্মরত আলজাজিরার সাংবাদিক হিবা মরগান জানান, সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই শহরের তিনটি প্রধান সেতুর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, যার মধ্যে উমদুরমান শহর থেকে খার্তুমের সাথে সংযুক্ত দুটি সেতুও রয়েছে। একই আক্রমণের অংশ হিসেবে খার্তুমের উত্তরে আরএসএফের অবস্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী।
মরগান আরও জানান, সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকেও অগ্রসর হয়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছেও তীব্র লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। সামরিক সূত্রগুলোর ভাষ্যমতে, মাসের পর মাস ধরে তীব্র এই আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাপ্রধান আবদুল ফাত্তাহ আলবুরহান এবং র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নেতা মোহাম্মদ হামদান হেমেদাতি দাগালোদের মধ্যে উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সুদানের চলমান এই গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। যাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত খার্তুমের একটি এলাকায় বসবাসরত একজন বাসিন্দা আলজাজিরাকে বলেন, প্রায় ভোর থেকেই আমরা চারপাশ থেকে ভারী গোলাবারুদের আওয়াজ পাচ্ছি। তিনি আরও জানান, স্থানীয় জনগণ মিলিশিয়াদের কারণে অতিষ্ঠ। সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনী কর্তৃক শহরটি পুনর্দখলের আশায় আছে।
এদিকে খার্তুমের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, উমদুরমানের কারারি জেলায় আরএসএফের গোলাবর্ষণে চারজন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছে। আহতদের পরবর্তীতে আলনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে গত বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান আব্দুল ফাতাহ আলবুরহানের সাথে বৈঠকে সুদানের ক্রমবর্ধমান সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮,৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৩৩,০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
সেই সাথে সংঘাতের কারণে সুদানে দেখা দিয়েছে এক মারাত্মক মানবিক সংকট। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধের কারণে খাদ্যসংকট আরও তীব্র হতে পারে এবং সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
উল্লেখ্য, সুদানের সেনাবাহিনীর বর্তমান আক্রমণ আরএসএফ এর শক্তিশালী স্থলবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের নতুন ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে সেনাবাহিনী খার্তুম পুনর্দখলে আপ্রাণ চেষ্টা চালালেও, আরএসএফ তাদের অবস্থান ধরে রাখতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সেইসাথে দেশের অবস্থা এখনও অস্থিতিশীল। তবে আন্তর্জাতিক মহল এখনও যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র: আলজাজিরা ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link