নিউজনেস্ট

হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু ঘিরে রহস্য

হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু ঘিরে রহস্য
হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ছবি : আল জাজিরা

গতকাল ২৭শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।  হামলার মূল টার্গেট ছিল হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। তবে হামলার পর ইসরায়েল হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার দাবি করলেও তার মৃত্যুর ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

ইসরায়েলি বাহিনীর ভাষ্যমতে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লেবাননের হারাত হারিক এলাকায় হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। যেখানে তিনি একটি বৈঠকে অংশ নিচ্ছিলেন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।  এদিকে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমগুলোর পক্ষ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। যদিও এখনো হামলার সঠিক ফলাফল নিশ্চিত করতে পারেনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। 

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আশংকা প্রকাশ করে আরও বলা হয়, নাসরুল্লাহকে হত্যা করার এই প্রচেষ্টা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারে। এবং নতুন করে সামনের দিনগুলোতে ইরান, ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়াসহ অন্যান্য ফ্রন্টে সমূহ সংঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম যা বলছে

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের কাছে ইসরায়েলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছে, নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে হামলার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠিন ছিল। এর সফলতা নির্ধারণ করতে কিছুটা সময় লাগবে।

অন্যদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার সময় ঘটনাস্থলে হিজবুল্লাহ ও ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার পর নাসরুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে ইরানের তাসনিম সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়, নাসরুল্লাহ নিরাপদে আছেন।

হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়া

এই হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইসরায়েলের সাফাদ এবং গ্যালিলি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। তবে নাসরুল্লাহর বর্তমান অবস্থা নিয়ে এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি হিজবুল্লাহ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এবং ইতিমধ্যেই লেবাননের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা এই পরিস্থিতি ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে নতুন করে বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

উল্লেখ্য, গতকাল দক্ষিণ বৈরুতে প্রায় ৩০টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।  আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী এই হামলার ফলে কফায়াত, শুইফাত, আল হাদাথ এবং আল লাইলাকি এলাকার বেশ কয়েকটি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।  এদিকে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই হামলায় ৬ জন নিহত ও ৯১ জন আহত হয়েছে। 

ইসরায়েলি দাবি ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া

অপরদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের টার্গেট মূলত  হিজবুল্লাহর রকেট লঞ্চিং প্ল্যাটফর্ম ও অস্ত্রাগার ছিল, যা হামলায় ধ্বংস হওয়া বেসামরিক ভবনগুলোর নিচে লুকানো ছিল।  কিন্তু হিজবুল্লাহ এই দাবিকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে জানায়, ইসরায়েল বেসামরিক ভবনগুলোতে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে হামলা চালিয়েছে।  হিজবুল্লাহর  দাবি করে, ওই ভবনগুলোতে কোনো ধরনের অস্ত্র ছিল না।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত