গতকাল রাত থেকেই হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানা রহস্য জট। তবে আজ দুপুরে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় দাবি করেছে, হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ গতরাতে বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে চালানো একটি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভাষ্যমতে, গতরাতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে অবস্থিত হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় সদর দফতরে চালানো হামলায় হাসান নাসরুল্লাহসহ দলের আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিহত হয়।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র অবিখাই আদ্রাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, হিজবুল্লাহর দক্ষিণ ফ্রন্টের নেতা আলী কার্কিসহ আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা একই হামলায় নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একটি রেডিও বার্তার তথ্যমতে, এই হামলায় হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ নেতা হাশিম সাফি আদ-দীন বেঁচে গেছেন।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র আরও জানিয়েছে, হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা এবং হিজবুল্লাহর সেইফ জোন ধ্বংসের এই অপারেশনে ১ টন ওজনের প্রায় ৮৫টি শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মিসাইল হামলার প্রস্তুতি ঠেকানোও এই হামলার বড় একটি উদ্দেশ্য ছিল ।
ইসরায়েলিদের উচ্ছ্বাস
এদিকে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হার্টসি হালেভি এ হামলাকে সফল অপারেশন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ’দীর্ঘ পরিকল্পনার পর এই হামলা সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। বার্তাটি পরিষ্কার: যারা ইসরায়েলি নাগরিকদের হুমকি দেবে, আমরা তাদের থামাতে সক্ষম।’
একই ধরনের বিবৃতি দেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। তিনি এ হামলাকে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আমাদের শত্রুরা জেনে রাখুক, যারা আমাদের আক্রমণ করবে, তারা বাঁচতে পারবে না।’
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
অপরদিকে ইরানের পার্লামেন্টের নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিটি ইসরায়েলের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ’ইসরায়েলের এই অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে।’ এদিকে রয়টার্স জানায়, ইরান হিজবুল্লাহ এবং তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এ হামলার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার মাধ্যমে দলটির সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তি দুর্বল করা। যা ইসরায়েলকে লেবাননে স্থল আক্রমণ এড়াতে সাহায্য করবে।
বলাবাহুল্য, হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু হিজবুল্লাহর সামগ্রিক কাঠামোর ওপর বড় ধরনের আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ইরানের আঞ্চলিক সহিংস পরিকল্পনার উপরও এর প্রভাব ফেলবে।
সূত্র: আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link