গাজা যুদ্ধের আজ ৩৫৯তম দিন। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বোমা হামলায় গাজার বিভিন্ন অঞ্চল এখনও পরিণত হচ্ছে ধ্বংসস্তূপে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলি নৃশংসতায় গাজায় এ পর্যন্ত ৪১,৫৮৬ জন মানুষ শহিদ হয়েছেন। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯৬,২১০ জনে। এদিকে পরিস্থিতি দিন দিন মানবিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে এবং ধ্বংসের মাত্রা বেড়েই চলছে।
তীব্র বোমা হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ
গতকাল রাফাহ শহরের পূর্বে অবস্থিত আল জানিনা মহল্লায় তীব্র বিমান হামলা করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। একই সাথে হামলায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
এদিকে গাজার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত নুসাইরাতের উত্তর-পশ্চিম এলাকায় দখলদার বাহিনীর হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে গাজা সিটির জালা স্ট্রিট নিকটবর্তী আল-ঘাফরি চৌরাস্তায় আরও একটি বাড়িতে বিমান হামলায় সেখানকার শহিদ ও আহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এতদিন ইসরায়েলের উত্তর সীমান্ত এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বিমান হামলায় বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে একজন মার্কিন সিনিয়র কর্মকর্তা বিখ্যাত সংবাদ সংস্থা ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’কে জানান, নাসরুল্লাহ হত্যাকাণ্ড যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কী ধরনের প্রভাব ফেলবে তা এখনই বলা কঠিন। হিজবুল্লাহ এবং হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তবে ইসরায়েলি অভিযান কিছুটা কমলে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু হতে পারে।
বলা বাহুল্য, গাজায় চলমান গণহত্যায় উপত্যকা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে গভীর মানবিক সংকট। বোমা হামলা ও গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে একের পর এক বাড়িঘর। হাজার হাজার মানুষ ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। নেই খাদ্য। ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি সামগ্রীরও মারাত্মক অভাব। এহেন পরিস্থিতিতে যেখানে প্রয়োজন ছিলো একটি যুদ্ধবিরতির; সেখানে এখন যুদ্ধবিরতির আলোচনার আকাশে জমেছে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ। আর গাজার নিরীহ জনগণ প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হচ্ছে নিত্য নতুন নৃশংস পরিস্থিতির।
সূত্র: আল আরাবি জাদিদ