গাজা উপত্যকা। বিশ্বের সবচে’ বড় উন্মুক্ত কারাগার। বর্তমানে যেখানে চলছে পৃথিবীর ইতিহাসে সব থেকে বর্বর গণহত্যা। এমন এক গণহত্যা, যা পৃথিবীর সকল বর্বর হত্যা ইতিহাসের কালো অধ্যায়কে হার মানিয়েছে।
হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞে গাজার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, মানুষ আপন ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন কবরস্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ, পুরো গাজায় একমাত্র কবরস্থান অল্প হলেও নিরাপদ।
গাজার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আলি আল-কাসসাস। ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে বাঁচতে বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছেন কবরস্থানে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে আলি আল-কাসসাস নিজের অতীত ও বর্তমান অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমি গাজা উপত্যকার অন্যতম বড় ব্যবসায়ী ছিলাম। আমার অনেকগুলো মাংসের দোকান ছিল। কিন্তু আজ আমি কবরস্থানে একটি জীর্ণ তাঁবুতে আমার কন্যাদের সাথে বসবাস করছি।
আমাদের আশেপাশে অনেক শহিদদের দাফন করা হয়েছে এমনকি আমাদের এই তাঁবুর পাশেই তিনটি লাশ রয়েছে। আমার মেয়েরা মাঝে মাঝে এই ভয়ে আঁতকে উঠে যে, লাশগুলো জেগে উঠবে! ভয় ও শঙ্কার পাশাপাশি আমি নিজের ও আমার মেয়েদের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারি না। কখনো কখনো ভাগ্যে জুটলে আমি রাস্তার গলি থেকে পাউরুটির টুকরো সংগ্রহ করে তাতে সামান্য পানি ও লবণ দিয়ে আমার ও মেয়েদের ক্ষুধা নিবারণ করার চেষ্টা করি।
শীতের শুরুতে বৃষ্টিতে আমাদের তাঁবু প্লাবিত হয়ে যায়। একদিন আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি, একটি বিচ্ছু আমার ঘুমন্ত মেয়েদের শরীরে হাঁটছে! অথচ যুদ্ধের আগে আমি দশ মিনিটের মধ্যে ৮০০ কেজি পর্যন্ত ওজনের গবাদি পশু জবাই করতে পারতাম! কিন্তু এখন আমার শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে!
সূত্র: আল জাজিরা