গাজায় দীর্ঘ এক বছর যুদ্ধের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধের প্রভাবে দেশটির পর্যটন খাতে প্রায় ১৯.৫ বিলিয়ন শেকেল বা (ডলার হিসেবে) ৫.২৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ পর্যটনে ক্ষতির পরিমাণ
জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যটন খাতে- ১৮.৭ বিলিয়ন শেকেল বা ৫.০৪ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পর্যটনেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭৫৬ মিলিয়ন শেকেল বা ২০৪ মিলিয়ন ডলার। বিশেষ করে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে এই ক্ষতি বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসরায়েলের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বরাতে এই তথ্যগুলো জানা গেছে।
বড় ধরনের বাস্তুচ্যুতি
এদিকে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো থেকে স্থানীয় জনগণকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েলের পর্যটন মন্ত্রণালয়। বিশেষত লেবানন ও গাজার সীমান্তবর্তী ইসরায়েলের এলাকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, অধিকাংশ বাস্তুচ্যুতিই ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ঘটেছে। প্রায় ৬৮ হাজার ৭১২ জন ইসরায়েলি নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৬০০ জন হোটেলে অবস্থান করছেন আর বাকিরা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
অন্যদিকে ইসরায়েল সরকারকে এই বাস্তুচ্যুতদের আবাসনের পেছনে ব্যয় করতে হয়েছে প্রায় ৫.৪৫ বিলিয়ন শেকেল বা ১.৫ বিলিয়ন ডলার। যারা হোটেলে না থেকে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের জন্য ব্যয় করতে হয়েছে ৩.১৮ বিলিয়ন শেকেল বা ৮৫৯ মিলিয়ন ডলার। যা ইসরায়েলের অর্থনীতির বড় ধরনের অতিরিক্ত ব্যয়।
যুদ্ধের আর্থিক প্রভাব ও পুনর্বাসন ব্যয়
এদিকে যুদ্ধ চলাকালীন প্রায় ১ লাখ মানুষকে যুদ্ধপ্রবণ অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮.৬৪৮ বিলিয়ন শেকেল বা ২.৩৪ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে হোটেল খরচ হিসেবে ব্যয় হয়েছে ৫.৪৬ বিলিয়ন শেকেল বা ১.৫ বিলিয়ন ডলার। ইসরায়েলি আবাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ উদ্ভূত আবাসন সমস্যা সমাধানে ইসরায়েল সরকারকে প্রায় ৪ মিলিয়ন রুম এবং ১৩.৫ মিলিয়ন রাত্রিকালীন থাকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। বাসস্থানের অনুদান হিসেবে প্রদান করতে হয়েছে ৩.২ বিলিয়ন শেকেল ৮৬৪ মিলিয়ন ডলার।
পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারে বাধা
এদিকে গাজা যুদ্ধ ইসরায়েলের পর্যটন শিল্প পুনরুদ্ধারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠার আগেই যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের এই খাত আবারও সংকটে পড়েছে। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৪ সালের শেষে ইসরায়েলে মাত্র ১ মিলিয়ন পর্যটক প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় এক চতুর্থাংশেরও কম।
উপসংহার
গাজা যুদ্ধ ইসরায়েলের পর্যটন শিল্পে অভূতপূর্ব ক্ষতি ডেকে এনেছে। কোভিড-১৯ মহামারির পর পুনরুদ্ধারের আশায় থাকা এই খাত নতুন করে বড় সংকটে পড়েছে। ২০২৪ সাল শেষের পথে থাকলেও পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারে কোন পথ দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link