নিউজনেস্ট

হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে ইসরায়েলের আক্রমণের ইতিহাস

হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণের ইতিহাস
২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধে হিজবুল্লাহর হামলায় ধ্বংস্প্রাপ্ত ইসরায়েলি ট্যাংক। ছবি: ট্যাংক পর্ন

নতুন করে লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। তবে লেবাননের অভ্যন্তরে ইসরায়েলের হামলা এবারই যে প্রথম তা কিন্তু নয়। এর আগেও দুই দুইবার ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালায়।

প্রথম লেবানন যুদ্ধ

৬ জুন, ১৯৮২ সাল। লন্ডনে দখলদার ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে হত্যার চেষ্টা চালায় প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন ইসরাইয়েলের প্রধানমন্ত্রী মোনাচেম বেগিনের নির্দেশে ইয়াসীর আরাফাতের দল পিএলওকে নির্মূল করা ও লেবাননে স্বায়ত্বশাষন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননে অভিযান শুরু করে।

মাত্র ৮ দিনের মধ্যে লেবাননের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা টায়ার, নাবাতিয়া, হাসবায়া এবং শৌফসহ লেবাননের রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ পর্যন্ত দখল করে নেয় ইসরায়েল। কিন্তু ফলাফল শূণ্য। ক্রমাগত গেরিলা হামলার প্রেক্ষিতে কোন রকমের শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করা ছাড়াই, মাত্র এক বছরের মাথায় ১৯৮৩ সালে হিজবুল্লাহর আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয় ইসরায়েল। এবং পর্যায়ক্রমে ২০০০ সালের পর পুরোপুরি লেবানন থেকে হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় ইসরায়েল।

দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধ: ইসরায়েলের গর্ব মারকাভার অসহায় পরাজয়

২০০৬ সাল। এই বছরের ১২ই আগস্ট লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রভাব ধ্বংস করতে হিজবুল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ আর্মড ইউনিট ওয়াদি আল হুজাইরের বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত অভিযান শুরু করে। কিন্তু এবারও প্রায় ৪০টি শক্তিশালী মারকাভা ট্যাংক ও বুলডোজারের সাথে ২০ সেনাকে হারিয়ে লেবানন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয় ইসরায়েল।

চলমান স্থল হামলা: একটি বিশ্লেষণ

এবারের স্থল হামলাতেও ইতিহাস পুরাবৃত্তির শঙ্কাই প্রবল। কারণ, গাজায় এক বছর যুদ্ধে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় প্রচুর মারকাভা ট্যাংক ও সেনা হারানোর পর লেবাননে স্থল হামলা চালিয়ে নেওয়া ইসরায়েলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।

ইতোমধ্যেই নেতানিয়াহু গাজা লেবানন উভয় ফ্রন্ট একত্রে সামলাতে টাকার বিনিময়ে আফ্রিকান অভিবাসীদেরকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের পাশাপাশি গাজা এবং উত্তর সীমান্ত থেকে রিজার্ভ ফোর্স তলব করছে। একই সাথে আমেরিকা থেকে দ্রুত অস্ত্র সহযোগিতা পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছে ইসরায়েল। দুই দুইটি যুদ্ধফ্রন্টে ধারাবাহিক যুদ্ধ চালিয়ে নিতে ইসরায়েল যে হিমশিম খাচ্ছে, তা উল্লেখিত পরিস্থিতিগুলো থেকে বেশ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এদিকে লেবাননে হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগার ধ্বংসের লক্ষ্যে ইসরায়েলের স্থল হামলা প্রসঙ্গে অনেক নিরাপত্তা সংস্থা ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলছে, লেবাননের স্থল অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে ইসরায়েল নাসরুল্লাহ হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে পুর্ব প্রস্তুতকৃত হিজবুল্লাহর ফাঁদে ফেঁসে যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত