ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের নেভাতিম বিমানঘাঁটি বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পত্রিকা মাআরিভ। এছাড়া এ ঘটানায় ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি এই পত্রিকাটি। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, নেভাতিম বিমানঘাঁটির প্রধান রানওয়ের নিকটবর্তী একটি ভবনের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংবাদপত্র মাআরিভ এ ঘটনাকে “মারাত্মক ক্ষতি” বলে অবহিত করেছে।
এদিকে মার্কিন সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস(এপি) স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বিমানঘরের ছাদে বড় ধরনের গর্ত তৈরি করেছে এবং বিমানঘরের আশেপাশে ছাদের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে আছে। তবে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই ক্ষতির কারণ সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি এবং স্যাটেলাইট চিত্রে হামলার সময় কোনো বিমান সেখানে ছিল কিনা, তা বোঝা যায়নি।
উল্লেখ্য, নেভাতিম বিমানঘাঁটি ইসরায়েলের কাছে থাকা সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ লাইটনিং-২— যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি— এর মূল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। গত বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের বিমানঘাঁটিতে কিছু ক্ষতি হয়েছে, তবে এর গুরুত্বকে তারা কমিয়ে দেখিয়েছে এবং হামলার সঠিক স্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
এ ব্যাপারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিও জানিয়েছে, ইরানি হামলায় বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ঘাঁটির অবকাঠামোতে কোনো গুরুতর ক্ষতি হয়নি। একইসাথে তারা জানিয়েছে, কোনো বিমান বা অস্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং ইরান এই হামলায় কোনো হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেনি।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক সূত্রের বরাতে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মূলত ঘাঁটির প্রশাসনিক ভবনগুলোতে আঘাত হেনেছে। তবে এতে ঘাঁটির মূল কাঠামোর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, ইরান তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরেও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, তবে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র সেখানকার অভ্যন্তরে আঘাত হানেনি। তবে সিএনএন জানিয়েছে, ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র মোসাদের সদর দপ্তরের এক কিলোমিটার কম দূরত্বে বিস্ফোরিত হয়েছে।
সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস, মাআরিভ, আনাদোলু এজেন্সি, সিএনএন, অ্যাক্সিওস