প্রথমবারের মতো ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলো ইসরায়েলি সেনা ঘাটি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত বুধবার ভোরে ইসরায়েলের দখলকৃত সিরিয়ার গোলানের উত্তরে তাদের একটি ঘাঁটিতে ইরাক থেকে ছোড়া একটি ড্রোন বিস্ফোরণে দুইজন সৈন্য নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিও জানিয়েছে, চলমান যুদ্ধের পর থেকে এই প্রথমবার ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ইসরায়েলি সেনা হতাহত হয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলায় মোট ২৫ জন সৈন্য আহত হয়েছে, যার মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। নিহত দুইজনই গোলানি ব্রিগেডের ১৩তম ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন এবং তাদের নাম ও ছবি প্রকাশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিওর তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বৃহস্পতিবার ভোরে ইরাক থেকে দুইটি বোমাবাহী ড্রোন ছোড়া হয়। এর মধ্যে একটিকে ধ্বংস করা গেলেও, অন্যটি শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সেটি গোলানের উত্তরে অবস্থিত ঘাঁটিতে বিস্ফোরিত হয়।
প্রতিরোধ গোষ্ঠীর দাবি
ইরাকের প্রতিরোধ আন্দোলন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বুধবার ভোরে দখলকৃত উত্তর ইসরায়েলের অঞ্চলের তিনটি লক্ষ্যবস্তুতে পৃথক তিনটি ড্রোন হামলা চালানো হয়।
এই হামলাকে দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেছে। বিবৃতিতে তারা আরও জানায়, এই হামলা ফিলিস্তিন ও লেবাননের জনগণের প্রতি সমর্থন এবং শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের ওপর ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়েছে।
গাজার প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন
উল্লেখ্য, ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো কয়েক মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে চলমান প্রতিরোধকে সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের ওপর রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। ‘ইরাকের প্রতিরোধ আন্দোলন’, যা হিজবুল্লাহ, নুজাবা এবং কাতায়েবে সাইয়্যেদ আশ-শুহাদার মতো গোষ্ঠীগুলির সমন্বয়ে গঠিত, ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের হামলা গোলান থেকে হাইফা এবং দক্ষিণে ইলাত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
এই হামলা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান দুর্বলতাকে আবারও সামনে নিয়ে আসল। তবে ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জটিলতাকে আরও গভীর করে তুলবে।
সূত্র: আল-জাজিরা