নিউজনেস্ট

ছত্তীসগড়ে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ২৮ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত

ছত্তীসগড়ে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ২৮ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত
ছত্তীসগড়ে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ২৮ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত। ছবি : রয়টার্স

ভারতের খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ ছত্তীসগড় রাজ্যে সংঘর্ষ এবং গুলি বিনিময়ের সময় অন্তত ২৮ জন মাওবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে দেশটির পুলিশ।  পুলিশ জানায় , গতকাল ৪ অক্টোবর শুক্রবার এই সহিংস ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে, সংঘর্ষে একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও ঘুরতর আহত হন, যাকে পরবর্তীতে হেলিকপ্টারে করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সংঘর্ষের এই ঘটনাটি ছত্তীসগড় রাজ্যের দক্ষিণে অবস্থিত দুর্গম আবুজমাড়ের জঙ্গলে সংঘটিত হয়। অঞ্চলটি বহু বছর ধরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

উলেখ্য, ১৯৬০-এর দশক থেকেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তাদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে তারা প্রায় ২০টি রাজ্যে সক্রিয়। মাওবাদীরা নিজেদের বামপন্থী ভাবধারায় পরিচালিত বলে দাবি করে। তাদের ভাষ্যমতে, দরিদ্র গ্রামীণ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে তারা লড়াই করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত সরকার মাওবাদী বিদ্রোহীদের দমনে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। গত মাসে ছত্তীসগড়ে এক সফরে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাওবাদীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘অস্ত্র ফেলে দিন, নতুবা সামগ্রিক আক্রমণের সম্মুখীন হতে হবে।’ তিনি আরও জানান, দিল্লি আশা করছে ২০২৬ সালের শুরুর মধ্যেই এই বিদ্রোহ পুরোপুরি দমন করা সম্ভব হবে।

মাওবাদীদের ইতিহাস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

মাওবাদী বিদ্রোহীদের আন্দোলন ১৯৬৭ সালে শুরু হয়, যা পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তাদের দীর্ঘ এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। মাওবাদীরা দাবি করে, তারা জমি ও কর্মসংস্থানের মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত গ্রামীণ দরিদ্রদের পক্ষে। গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়েও ভারতের অন্যতম মাওবাদী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি এলাকাতে ১২ জন মাওবাদী সংঘর্ষে নিহত হয়।

গড়চিরোলি “রেড করিডর” এবং সরকারের পদক্ষেপ

মাওবাদীদের প্রভাব ভারতের মধ্য, দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চল বিস্তৃত রেড করিডর নামে পরিচিত এলাকায় বেশি। বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে ভারত সরকার লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করে এই অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে। সরকারের দাবি, বর্তমানে তারা বিদ্রোহকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ২০১০ সালে যেখানে ৯৬টি জেলায় মাওবাদীরা সক্রিয় ছিল, সেখানে ২০২৩ সালে এসে এই সংখ্যা ৪৫টিতে নেমে এসেছে।

মাওবাদীদের আদর্শ এবং দাবি

মাওবাদীরা চীনের প্রয়াত নেতা মাও সে তুংকে তাদের আদর্শে প্রভাবিত। তারা কৃষক ও দরিদ্র জনগণের জন্য জমি ও কর্মসংস্থানের অধিকার দাবি করে আসছে। তারা জানিয়েছে , সমাজের শোষিত অংশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত