এক বছর পেরোলেও গাজায় হামাসকে নির্মূল করতে পারেনি ইসরায়েল। উল্টো সময়ে সময়ে গাজায় ইসরায়েলি ট্যাঙ্কে হামাসের সফল হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়েছে ভাইরাল। ভাইরাল হওয়া এসব ভিডিওতে ইসরায়েলের উপর হামলায় হামাসকে মর্টার শেল, মেশিন গান এবং রকেট পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ফলে জনমনে হামাসের অস্ত্রভাণ্ডার সম্পর্কে তৈরি হয়েছে কৌতূহল। হামাসের আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রের তালিকায় যেসব আধুনিক অস্ত্র রয়েছে তা নিম্নরূপ:
আল ইয়াসিন-১০৫
এটি মূলত একটি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী শেল। তবে এটির এ্যান্টি পারসন এবং এ্যান্টি ফোর্টিফিকেশন সংস্করণও রয়েছে। আল ইয়াসিন-১০৫ এর এ্যান্টি পারসন সংস্করণটি টিবিজি নামেও পরিচিত। রাশিয়ান পি-টু আরপিজির আদলে সর্বপ্রথম ২০০৪ সালে এটি তৈরি করে হামাস। তবে বর্তমানের উন্নত আল ইয়াসীন-১০৫ শেলগুলো ২০১৮ সালে উৎপাদন শুরু করে হামাস।
রুজুম রকেট
এটি মূলত স্বল্প পাল্লার একটি রকেট। ১১৪ মিমি ক্যালিবারের এই রকেট একসাথে অনেকগুলো নিক্ষেপ করা যায়। ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে উড়ে শত্রুকে আঘাত করতে সক্ষম এই রকেট তৈরি করেছে হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেড।
প্যারাগ্লাইডার
সাধারণত পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় আকাশে উড়ার জন্য এর ব্যবহার দেখা যায়। তবে ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ঐতিহাসিক অভিযানে এগুলোর সামরিক ব্যবহার করে ইসরায়েলের উপর আকাশ পথে হামলা চালায় হামাস।
প্যারাগ্লাইডার একটি মোটর চালিত যান। বাতাসের শক্তি ব্যবহার করে এটি শধুমাত্র সামনের দিকে উড়তে পারে। তবে রাডার দিয়ে প্যারাগ্লাইডার শনাক্ত করা যায় না। শত্রু এলাকায় এর মাধ্যমে দ্রুত আক্রমণ করা যায়। এবং এটি ব্যবহার করার জন্য কোন এয়ারপোর্টের দরকার হয় না।
মেটাব-১
এটি মূলত হামাসের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি একটি সার্ফেস টু সার্ফেস রকেট। রকেটটির সার্ফেস টু এয়ার ভার্সনও রয়েছে। ঘন্টায় ৭০০ কিলোমিটার বেগে উড়ে সর্বনিম্ন ৫০০ মিটার থেকে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই রকেট। ১.৫ মিটার দৈর্ঘের এই রকেটটির ওজন ৮০ কিলোগ্রাম। রাডারের তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই রকেট নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে।
আল আসিফা
এটি মূলত টর্পেডোর মত একটি রকেট। এর গতি ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ২০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানতে সক্ষম এই রকেট। জাহাজ বা সাবমেরিনে বিস্ফোরিত হওয়ার সক্ষমতা দিয়ে এটির ডিজাইন করা হয়েছে। লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছার আগে এটিকে শনাক্ত করা কঠিন বলে এই রকেট পানিতে শত্রুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সাম-১৮
সাম-১৮ ‘বিমান শিকারি’ নামেও এটি পরিচিত। ১.৫৭ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০.৮ কিলোগ্রাম ওজনের এই রকেটের পরিসীমা ৫০০ মিটার থেকে ১০ কিলোমিটার। এটি মূলত আকাশে থাকা স্বল্প দুরত্বের লক্ষ্যবস্তুগুলো ধ্বংস করার জন্য তৈরি। এছাড়াও এ রকেটের বিশেষ দুইটি সুবিধা আছে।
প্রথমত, এই রকেট তৈরিতে ইনফ্রারেড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে তাপ সিগন্যাল শনাক্ত করে টার্গেটে আঘাত করার সক্ষমতা রয়েছে রকেটটির।
দ্বিতীয়ত, এটি প্রক্সিমিটি ফিউজ দ্বারা সজ্জিত। তাই লক্ষ্যবস্তুর নিকটে গিয়ে স্বয়ংক্রিয় বিস্ফোরিত হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই রকেটের। সেকেন্ডে ৮০০ মিটার বেগে উড়তে সক্ষম এই রকেট।
এম-৯০ রকেট
এটি ‘মুকাদ্দাম এম-৯০’ নামেও পরিচিত। হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেডের নেতা ইবরাহিম মুকাদ্দামের নামে এর নামকরণ করা হয়েছে। রকেটটি প্রথমবার প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। ৫০ কেজি ওজনের বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম এই রকেটের পরিসীমা ৯০ কিলোমিটার। রকেটটির দৈর্ঘ্য ৬ মিটার।
সূত্র: আল আরাবি
শাহাদাত হুসাইন
- শাহাদাত হুসাইন#molongui-disabled-link
- শাহাদাত হুসাইন#molongui-disabled-link
- শাহাদাত হুসাইন#molongui-disabled-link
- শাহাদাত হুসাইন#molongui-disabled-link