মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের প্রসার ও আঞ্চলিক অস্থিরতা নিয়ে মঙ্গলবার তুরস্কের সংসদে অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি অধিবেশন। ইসরায়েলের চূড়ান্ত লক্ষ্য তুর্কি ভূখণ্ডে আক্রমণ করা -সাম্প্রতিক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের এমন মন্তব্যের পরপরই এই উচ্চ নিরাপত্তার সাথে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হল।
এদিকে এরদোগানের এই মন্তব্য বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করলেও, ইসরায়েল সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি এবং আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত এই বিশেষ অধিবেশনের ওপরও কোন মন্তব্য করেনি। উল্লেখ্য, এই অধিবেশনের মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘লেবাননে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব ও আঞ্চলিক উন্নয়ন।’
আলোচনার বিষয়বস্তু ও সরকারের অবস্থান
অধিবেশনের আগে তুরস্কের সংসদীয় স্পিকার নোমান কুর্তুলমুশ জানান, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়াসার গুলার এ প্রসঙ্গে একটি বিশদ উপস্থাপনা করবেন। যেই বক্তব্যে মূলত গাজা ও লেবাননে সংঘাতের প্রসার এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। এ সময় কুর্তুলমুশ আরও বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলে অশান্তি কমাতে আমাদের সকল দায়িত্ব পালন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘তুরস্কের জাতীয় সংসদে আমাদের ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা এই পরিস্থিতিকে জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করছি।’
ন্যাটো সদস্য হিসেবে তুরস্কের অবস্থান
উল্লেখ্য, তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের অন্যতম কট্টর সমালোচক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি ইসরায়েলের সাথে বাণিজ্য বন্ধ করেছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে একটি মামলায় যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এছাড়া গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সংসদে বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর স্বপ্নের ‘আদর্শ শহর’ এবং ‘প্রতিশ্রুত ভূমি’ প্রতিষ্ঠা করতে চান।
সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে অনুষ্ঠিত এই সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশনে এরদোগান সতর্ক করে বলেন, ‘লেবাননের পর ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য আমাদের দেশ হবে।’
সীমান্তে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা
এদিকে তুরস্কের ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির নেতা এবং প্রেসিডেন্ট এরদোগানের প্রধান মিত্র দেভলেত বাহচেলি সতর্ক করে বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্থিতিশীলতা আমাদের সীমান্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং শীঘ্রই ইসরায়েল তুরস্ককে উত্যক্ত করতে পারে।’ তবে তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতা ওজগুর ওজেল এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে বলেন, ‘এটি বিশ্বাসযোগ্য নয় যে, নেতানিয়াহু তুরস্কে আক্রমণ চালাবে। বিশেষত তুরস্ক যখন ন্যাটোর সদস্য এবং এর একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী রয়েছে।’
তুরস্কের জনগণের প্রতিক্রিয়া
এদিকে সাম্প্রতিক কিছু জরিপের তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কের জনগণ ইসরায়েল প্রসঙ্গে তাদের দেশের নেওয়া অবস্থানকে শক্তভাবে সমর্থন করে। গত কয়েক দিন ধরে বিশেষ করে তুফানুল আকসা যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভকারী বেশ কয়েকজন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link