চলতি বছর আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কুন্দুজে আঙ্গুর উৎপাদন ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা কুন্দুজের কৃষিখাতে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এই সাফল্যে কৃষকগণ যেমন আনন্দিত, তেমনি তারা রপ্তানি ও বিপণনের ক্ষেত্রে সরকারের সহায়তা চেয়ে আবেদনও জানাচ্ছেন।
কৃষকদের মতে, কেবল দেশের অভ্যন্তরেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও আঙ্গুর রপ্তানির ব্যবস্থা করতে পারলে তারা উৎপাদন খরচের পূর্ণ মূল্য পেতে পারবেন। পাশাপাশি আঙ্গুর ও অন্যান্য তাজা ফল সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন করলে ফলগুলো দীর্ঘদিন ভালো রাখা সম্ভব হবে। যা কৃষকদের জন্য আরও লাভজনক হবে।
কুন্দুজের অপর এক কৃষক জানান, ‘এই বছর আঙ্গুরের ফসল খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু রপ্তানি ও বিপণনের সমস্যা আমাদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই, সরকার এই বিষয়গুলোতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, যাতে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্য পাঠাতে পারি এবং দীর্ঘমেয়াদে ফল সংরক্ষণের সুবিধা পাই।’
আরও পড়ুন: পাকা ডালিমে লাল আফগানিস্তানের ফারাহ প্রদেশের সহস্রাধিক বাগান
এদিকে স্থানীয় কর্মকর্তারাও এই বছর আঙ্গুরের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন। এ ব্যাপারে কুন্দুজ কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুল গফফার সিদ্দিকি বলেন, আমাদের কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ড্রিপ সেচ ব্যবস্থার প্রবর্তন আঙ্গুরের উৎপাদন বৃদ্ধিতে মূল ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এ বছর আঙ্গুর উৎপাদনে ৯০% বৃদ্ধি পেয়েছি, যা আমাদের জন্য একটি বিশাল অগ্রগতি।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশ ঐতিহ্যগতভাবে কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। এই প্রদেশে গম, চাল, এপ্রিকট, চেরি এবং বিশেষ করে আঙ্গুর উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও কুন্দুজ প্রদেশে পীচ, তরমুজ, কমলা, লেবু, বাদাম এবং পেস্তাসহ নানা ধরনের ফলও প্রচুর উৎপাদন হয়। তবে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান সীমান্ত বন্ধ রেখে আফগান ব্যবসায়ীদের জন্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করছে। ফলে এখন কুন্দুজের স্থানীয় বাজারও এই বিপুল পরিমাণ পণ্য ধারণে অক্ষম হয়ে পড়ছে।
তাই কুন্দুজের কৃষকদের জন্য আঙ্গুরের এত বেশি উৎপাদন যেমন আনন্দের। তেমনি এটি নতুন চ্যালেঞ্জও নিয়ে এসেছে। যদি সরকার এই পণ্যগুলোর সংরক্ষণ ও রপ্তানি বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়, তাহলে কৃষকেরা তাদের উৎপাদনের পূর্ণ মূল্য পেতে সক্ষম হবেন এবং লাভবান হবেন।
সূত্র: হুররিয়াত রেডিও