দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দিনদিন বেড়েই চলেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৪৭০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে আবার মৃত্যু হয়েছে ২১৪ জনের। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় মূল সমস্যা গোড়াতেই। যার কারণে বছরের পর বছর একই সমস্যা দেখা মানুষকে ভোগাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার, শক সিনড্রোম এবং ফ্লুইড ম্যানেজমেন্টে জটিলতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে হাসপাতালে আসা, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদে রোগের উপস্থিতি মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে। তাছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি স্পষ্ট। বিশেষত শহর এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীলতার অভাবেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না।
এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. খোরশেদ আলী মিয়া বলেন, ‘প্রাইমারি হেলথ কেয়ারকে শক্তিশালী করতে হলে এটি সিটি কর্পোরেশনের অধীনে না রেখে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে আনা প্রয়োজন। শহর এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমগুলোতে যথাযথ নজরদারি না থাকার কারণেই ডেঙ্গুর মতো নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগগুলো প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না।’
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সঠিকভাবে মশা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ভাইরাসের মিউটেশনের দিকে নজর রাখা জরুরি। চলতি বছর ডেঙ্গুর সবচেয়ে প্রভাবশালী সেরোটাইপ হচ্ছে ‘ডেন-২’। তবে পরপর দুই বছর একই ধরনের ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকায় সংক্রমণের হার কমে আসার আশা করছেন গবেষকরা।
এদিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে ডা. মো. সাইফুল্লাহ বলেন, ‘শক সিনড্রোম এবং ফ্লুইড ম্যানেজমেন্টের সঠিক ব্যবস্থাপনা ডেঙ্গু রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক রোগী হাসপাতালে দেরিতে আসছেন, যার ফলে চিকিৎসা জটিল হয়ে যাচ্ছে।’
মোটকথা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায় শুধু সরকারের নয়, নাগরিকদেরও এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানো উচিত। বাসাবাড়িতে জমে থাকা পানি এবং অপরিচ্ছন্ন স্থানগুলোতে ডেঙ্গু মশার বংশ বিস্তার রোধ করতে ব্যক্তিগত উদ্যোগও প্রয়োজন।
ডেস্ক রিপোর্ট
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link
- ডেস্ক রিপোর্ট#molongui-disabled-link