দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি বৃহৎ দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইন। এই দেশটির আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের বিস্তৃত অংশ জুড়ে ছড়িয়ে আছে মোরো মুসলিমরা। সম্প্রতি আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই মোরো মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে উঠে এসেছে বেশ কিছু তথ্য ।
ফিলিপাইনে ইসলামের শুভাগমন
ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে ইসলামের আগমন ঘটে ১০ম শতাব্দীতে, আরব ব্যবসায়ীদের এই সমৃদ্ধ অঞ্চলে প্রবেশের মাধ্যমে। তাদের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ ইসলামের সাথে পরিচিত হয় এবং পরবর্তী পাঁচ শতকের মধ্যে ইসলাম এ অঞ্চলের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়।
দীর্ঘকালীন উপনিবেশের প্রভাব
১৬শ শতাব্দীতে স্পেনীয়রা ফিলিপাইনকে নিজেদের দখলে নিয়ে ৩৩৩ বছর শাসন করে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ৪২ বছর ধরে এই অঞ্চলকে দখলে রাখে। এসব দীর্ঘ উপনিবেশের প্রভাবে, ফিলিপিন্সের মোট জনসংখ্যার ৯০% খ্রিস্টানে পরিণত হয়। মুসলিমদের মধ্যে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার ফলে মুসমিদের সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় পরিচয় হারানোর ঝুঁকি বেড়ে যায়। এবং সংখ্যালঘু হওয়ায় মুসলিমদের ওপর খ্রিস্টানরা অমানবিক নির্যাতন চালায়।
স্বাধীনতা সংগ্রামের অশান্তি
মুসলিম জনগণের ওপর অমানবিক হামলার ফলে ফিলিপাইনের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘাত মুসলিম সম্প্রদায়ের সমস্যাগুলোকে আরও তীব্র করে। এরপর সেখানকার মুসলিমরা নিজেদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই শুরু করে।
সশস্ত্র প্রতিরোধের উত্থান
ফিলিপাইনের স্বৈরশাসক ফার্ডিনান্ড মার্কোসের শাসনামলে মুসলমানদের ওপর ব্যাপক আগ্রাসন চালানো হয়। যাতে মোরো মুসলিমদরা এক কঠিন বাস্তবতার শিকার হয়। এ অবস্থায়, ১৯৬৮ সালে ‘মোরো জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট’ গঠন করে মুসলিমরা। এই সংগঠন মুসলিম ভূখণ্ডের সুরক্ষা এবং স্বাধীনতার দাবি করে। আর তাদের এই সংঘর্ষে ১০০,০০০ এরও বেশি মানুষ শহীদ হয় এবং ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
সূত্র: আল জাজিরা
