ইয়াহইয়া সিনওয়ার, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান এবং গাজার অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার পর তার মরদেহর ভবিষ্যৎ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসের এই পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিশ্লেষণে; ইসরায়েল সিনওয়ারের দেহ নিয়ে কী পদক্ষেপ নিতে পারে এবং এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন উঠে এসেছে।
সেখানে ইসরায়েলের জাতীয় ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের প্রধান ড. চেন কুগেলের বরাতে জানানো হয়, ইয়াহইয়া সিনওয়ার-এর মরদেহ ময়নাতদন্তের পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে মরদেহটি বর্তমানে কোথায় রাখা হয়েছে সে বিষয়ে কুগেল স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। ফলে এই অনিশ্চয়তা সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ইসরায়েলের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রশ্ন তৈরি করেছে।
এদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক বিশেষজ্ঞ জন বি. অলটারম্যান মনে করেন, সিনওয়ার-এর মরদেহ গোপনে দাফন করা হতে পারে। ঠিক যেমনটি ওসামা বিন লাদেনের ক্ষেত্রে করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘বিন লাদেনকে সমুদ্রে দ্রুত দাফন করা হয়েছিল যাতে বিন লাদেনের কবর ঘিরে কোনো মাজার বা স্মৃতি তৈরি না হয়। সিনওয়ার-এর ক্ষেত্রেও ইসরায়েল একই পথ অনুসরণ করতে পারে।’
অলটারম্যান আরও বলেন, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সম্ভবত সশস্ত্র নেতাদের মৃত্যুর পর কীভাবে তাদের মরদেহ পরিচালনা করতে হবে, সে সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট কৌশলগত প্রোটোকল অনুসরণ করে। তাদের লক্ষ্য থাকে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া, যা সশস্ত্র ব্যক্তিকে বীরত্বের প্রতীকে পরিণত করতে পারে। সিনওয়ার-এর মরদেহ নিয়ে এমন কোনো স্মৃতিচিহ্ন তৈরি করতে না দেওয়াই ইসরায়েলের অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে।
নিউয়র্ক টামসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েল সম্ভবত সিনওয়ার-এর মরদেহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দাফন করবে না। সিনওয়ারকে ইসরায়েলেই কোন গোপন স্থানে দাফন করা হতে পারে। যাতে সিনওয়ারের সমর্থকরা তাকে বীরত্বের প্রতীক হিসেবে দাঁড় করাতে না পারে।
তবে সর্বশেষ যাই ঘটুক, ইয়াহইয়া সিনওয়ার-এর মৃত্যু এবং তার মরদেহের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে রহস্য তৈরি হয়েছে, তা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জটিলতাকে যে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে তা পুরোপুরি বাস্তব। ইসরায়েল কীভাবে সিনওয়ার-এর দেহ নিয়ে পদক্ষেপ নেবে, তা এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সংঘাতের কৌশলগত দিকগুলোকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
সেই সাথে, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে ইয়াহইয়া সিনওয়ার-এর মৃত্যু এবং তার মরদেহের ব্যবস্থাপনা শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ককেই নয়, বরং উভয় পক্ষের মনস্তাত্ত্বিক এবং কৌশলগত অবস্থানে নতুন কোন রূপ তৈরি করতে পারে।
মোটকথা, সিনওয়ার-এর মরদেহের ভবিষ্যৎ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠতে চলেছে।
সূত্র: আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link