ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের আক্রমণের শিকার হয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। এসব হামলাগুলো ইসরায়েলি সামরিক কাঠামোয় হেনেছে বড় ধরনের আঘাত। প্রতিটি আক্রমণই ইসরায়েলের অভ্যন্তরে তৈরি করেছে চাপ এবং উদ্বেগ। নিহত হয়েছে বা নিখোঁজ রয়েছে একাধিক কর্নেল এবং কমান্ডার।
৪০১তম ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল ইহসান দাকসা
গত ২০শে অক্টোবর গাজার উত্তরে প্রতিরোধ বাহিনী ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৪০১তম ব্রিগেডের কর্নেল ইহসান দাকসার ট্যাঙ্ক লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটায়। ইহসান ছিলেন দ্রুজ সম্প্রদায়ের। এবং তাকে গাজা যুদ্ধের সময় নিহত হওয়া সবচেয়ে উচ্চপদস্থ ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম। তার মৃত্যু ইসরায়েলি বাহিনীর মনোবলে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
দক্ষিণ ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল আসাফ হামামি
গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা গাজা উপত্যকার সীমান্তবর্তী ইহুদি বসতিগুলোর ওপর প্রথম আক্রমণ চালানোর সময় কর্নেল আসাফ হামামিকে টার্গেট করে। তিনি ইসরায়েলি গাজা সীমান্তের দক্ষিণ ব্রিগেডের নেতৃত্বে ছিলেন। প্রতিরোধ বাহিনী এখনও তার মরদেহ গাজা উপত্যকায় আটক রেখেছে, যা দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাক্কা।
নাহাল ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল ইয়োনাতান স্টেইনবার্গ
গত ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর কারম আবু সালেম এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নাহাল ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল ইয়োনাতান স্টেইনবার্গ প্রতিরোধ বাহিনীর আক্রমণে নিহত হন। তার মৃত্যু ছিল ইসরায়েলি সামরিক কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের অপ্রত্যাশিত পতন।
ওয়েস্টব্যাংক ডিভিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কর্নেল লিওন বার
গত ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর গাজার সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে কর্নেল লিওন বার প্রতিরোধ বাহিনীর আক্রমণে নিহত হন। তার নিহত হওয়ার ঘটনাটি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর কার্যক্রমে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
গোয়েন্দা বাহিনীর বিশেষ ইউনিটের কমান্ডার কর্নেল রোই ইউসেফ
গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার রাইম কলোনিতে সংঘর্ষের সময় কর্নেল রোই ইউসেফকে প্রতিরোধ বাহিনী টার্গেট করে হত্যা করে। রোই ইউসুফ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি গোয়েন্দা ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
গোলানি ব্রিগেডের অপারেশন সেন্টার কমান্ডার কর্নেল ইৎশাক বেন বেসাত
গত ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর গাজার উত্তরের শুজাইয়া এলাকায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা একটি সফল হামলা চালিয়ে কর্নেল ইৎশাক বেন বেসাত এবং তার কয়েকজন সহকর্মীকে হত্যা করে। ইৎশাক বেন এর আগে ইসরায়েলের ইফতাহ এবং বারান ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নিহত হওয়ার সময় ইৎশাক বেন গোলানি ব্রিগেডের অপারেশন রুমের নেতৃত্বে ছিলেন।
এ সকল ধারাবাহিক আক্রমণ দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক নেতৃত্বের বাস্তবিক অর্থেই বড় ধরনের আঘাত। প্রতিরোধ বাহিনীর কৌশলগত এসব সাফল্য দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ বাড়াচ্ছে, যা চলমান সংঘাতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সূত্র: রসদ নিউজ