মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাকি আর মাত্র দুই দিন। বরাবরের মত এবারের নির্বাচনেও ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হতে পারে আমেরিকান আরব এবং মুসলিমদের ভোট। এই কথা মাথায় রেখেই শেষ মূহুর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় আমেরিকান আরব ও মুসলিমদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
গতকাল শনিবার ২রা নভেম্বর আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনা রাজ্যের বৃহত্তম শহর শার্লটের নির্বাচনী সমাবেশে হ্যারিস প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আমি গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
নর্থ ক্যারোলিনার শার্লট শহরের নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্যের ফাঁকে গাজা যুদ্ধবিরোধী এক প্রতিবাদকারীর আপত্তির মুখে এ কথা বলেন কমলা হ্যারিস। এ সময় যুদ্ধবিরোধী ওই ব্যক্তির আপত্তির জবাবে কমলা হ্যারিস আরও বলেন, ‘সবাই এই যুদ্ধের সমাপ্তি চায়। আর এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
আরও পড়ুন: ৭ই অক্টোবরে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে: নেতানিয়াহু
কমলা হ্যারিসের এই বক্তব্য এমন সময় আসল, যখন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবারের নির্বাচনী বিতর্কে গাজা ইস্যুকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন এবং এর আগে কমলা হ্যারিসকে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারণার সমাবেশে গাজা ও লেবাননে চলমান যুদ্ধ সমর্থনের জন্য তীব্র প্রতিবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আর্থিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ডালাসে ‘গণহত্যার সমর্থকদের ভোট নয়’ স্লোগানে গাজায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি বক্তারা আমেরিকার অর্থায়নে সংঘটিত গণহত্যার তীব্র সমালোচনা করেন। এ সময় উপস্থিত বক্তারা হ্যারিস ও তার সেক্রেটারি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সেক্রেটারির কিছু বক্তব্য তুলে ধরে তাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ফিলিস্তিনিদের উপর আক্রমণের অভিযোগ করেন। বক্তারা বলেন, ‘তাদের ভোট এই ধরনের প্রার্থীদের জন্য নয়’।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী সমাবেশের আগেও হয় যুদ্ধবিরোধী সবাবেশ। বিক্ষোভকারীরা সেখানেও গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানায়। আটলান্টার সেই প্রতিবাদ সমাবেশ ঘিরে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষণীয় ছিল।
সাধারণত মার্কিন রাজনীতিতে আরব ও মুসলিমদের প্রতি মনোযোগ আগে দেখা যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রায় অবহেলিতই থাকেন মুসলিমরা। বড় রাজনৈতিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা প্রায়শই মুসলিমদের কথা উল্লেখ করেন না। তবে এবারের নির্বাচনে মুসলিমদের ভোট পেতে হ্যারিস ও ট্রাম্প উভয়েই আগ্রহী। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও মুসলিম অধ্যুষিত মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মিশিগান, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের নির্বাচনী ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কিন্তু নির্বাচনের সর্বশেষ জরিপ অনুসারে, আমেরিকান আরব এবং মুসলিম আমেরিকানদের একটি অংশ কমলা-ট্রাম্প উভয়ের প্রতিই অসন্তুষ্ট। এদের অধিকাংশই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা ভাবছেন অথবা আমেরিকার আরেক প্রসিদ্ধ রাজনৈতিক দল গ্রীন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনের পক্ষে ভোট দিতে পারেন। কারণ, স্টেইন গাজায় ইসরায়েলি সহিংসতার অবসানের দাবি জানিয়েছেন, যা স্টেইনকে মুসলিম ও আমেরিকান আরব সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলছে।
সূত্র: আল জাজিরা ও আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link