চলতি সপ্তাহে চীনে অনুষ্ঠিতব্য একাধিক আঞ্চলিক সম্মেলনে অংশ নিতে প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিং অং হ্লাইং। বৈদেশিক এই সফরে চীনের আঞ্চলিক সম্মেলন ছাড়াও অন্তত তিনটি দেশের বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভি বলেছে, আগামী ৬ ও ৭ই নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য গ্রেটার মেকং সাবরিজিয়ন এবং ইরাবতি-চাও ফ্রায়া-মেকং ইকোনমিক কো-অপারেশন স্ট্র্যাটেজির (এসিএমইসিএস) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করতে চীন সফরে যাবেন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। এই দুটি সম্মেলন ছাড়াও চীনের কুনমিংয়ে ভিয়েতনাম, লাওস এবং কম্বোডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং।

জান্তা প্রধানের বরাতে এমআরটিভি আরও জানিয়েছে, সফরে চীনের সাথে বৈঠকে চীন-মিয়ানমারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অর্থনৈতিক খাতসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করবেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর জান্তা প্রধানের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তাবিরোধীদের সাথে সামরিক বাহিনীর ক্রমাগত সংঘাতে অস্থিতিশীল বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার।

সাম্প্রতিক সময়ে চীন সীমান্তের নিকটবর্তী অঞ্চলগুলোতে বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর সাথে সামরিক জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সর্বশেষ গেল অক্টোবরেও জান্তাবিরোধীদের প্রচণ্ড হামলায় বেশ কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে জান্তাবিরোধী জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই অগ্রগতি চীনের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। এর ফলে মিয়ানমারের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা লাগোয়া সীমান্তের কিছু অংশ বন্ধ করার পাশাপাশি সেখান থেকে আমদানি বাতিল করেছে চীন।

তবে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি বন্ধ করলেও দেশটি ঘিরে চীনের বেশ কিছু কৌশলগত অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। এর মধ্যে আন্তঃদেশীয় পরিসরে একটি বৃহৎ তেল ও গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন এবং বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমারের অংশে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ উল্লেখযোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *