নিউজনেস্ট

১৫ বছরের আওয়ামী শাসনে বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রায় দুই হাজার

১৫ বছরের আওয়ামী শাসনে বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রায় দুই হাজার
১৫ বছরের আওয়ামী শাসনে বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রায় দুই হাজার। ছবি: নিউজনেস্ট

দেশে গত ১৫ বছরে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের শাসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ‘ক্রসফায়ার’ ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে ১,৯২৬ জন। সম্প্রতি এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আসকের প্রকাশিত রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের শাসনামলে ১,৯২৬টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ব্যাপারে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্যে দেখা গেছে, শুধু ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্তই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ছিল ১,২৯৩ জন। এতে স্পষ্ট হয় যে, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

আসকের রিপোর্টে আরও বলা হয়, এসব বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাগুলোতে সাধারণত পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত ছিলেন।  

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময়ও ‘ক্রসফায়ার’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সেসময় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাগুলো নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। তবে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের হার কিছুটা কমলেও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়নি।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন্দুকযুদ্ধের গল্প তৈরি করে এসব হত্যার ঘটনাগুলোকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ মানবাধিকার সংস্থাগুলো ২০১৪ সালের আলোচিত নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘নৃশংস সেই ঘটনাতেও প্রথমে বন্দুকযুদ্ধের কথা বলা হলেও শেষে কিন্তু দেখা গেছে, র‍্যাব সদস্যরা মূলত অর্থের বিনিময়েই এই অপরাধে অংশ নেয়।’

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে শুধুমাত্র মাদক কারবারি বা সন্ত্রাসীরা নয়, রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষও ভুক্তভোগী হয়েছেন। এসব ঘটনার অনেক ক্ষেত্রেই নিরপরাধ ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা অতীব জরুরি।

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত