সম্প্রতি ট্রাম্পকে ইলন মাস্কের সমর্থনকে ‘অন্য রকম পাগলামি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস। অবশ্য এর কারণও আছে। রিপাবলিক প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে ইলন মাস্কের রাজনৈতিক কমিটির ব্যয় ইতোমধ্যেই ১১৮ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে, কী এমন বিশেষ কারণ, যার জন্য ট্রাম্পকে এমন সমর্থন দিচ্ছেন ইলন মাস্ক?
ওবামা থেকে বাইডেন: ইলন মাস্কের রাজনৈতিক পরিবর্তন
ইলন মাস্ক সর্বদা যে রিপাবলিকান ছিলেন তাও কিন্তু নয়। নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকেও সমর্থন করেছেন ইলন মাস্ক। ২০০৭ সালে ইলন মাস্ক বারাক ওবামার প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইনে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেন এবং ২০১৫ সালে হিলারি ক্লিনটনকে এই ট্রাম্পের বিরুদ্ধেই সহায়তা করেন। এমনকি ২০২০ সালে জো বাইডেনকেও ভোট দেন ইলন মাস্ক। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এসেছে এক বড় পরিবর্তন।
২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসন ধনীদের ওপর বিশেষ একটি আয়কর চালু করার ঘোষণা দেয়, যা ‘বিলেনিয়ারদের আয়কর’ নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে সম্পদের বিপরীতে ঋণ নিয়ে ধনী ব্যক্তিদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুবিধা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রস্তাবিত এই কর আইনের ফলে মাস্কের মতো বিলিয়নেয়ারদের ওপর বড় চাপ তৈরি হয়।
মাস্কের প্রতিক্রিয়া
শুরু থেকেই এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন মাস্ক। এক্স প্ল্যাটফর্মে তিনি তার ফ্যান ফলোয়ারদের সতর্ক করেন, ‘বিলেনিয়ারদের কর সংগ্রহ শেষে তারা আপনাদের দিকে আসবে।’ তিনি ফেডারেল সরকারের অর্থ অপচয় নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, যত্রতত্র সরকারী ট্যাক্স ব্যবহার সাধারণ মানুষের ওপর কর চাপিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়াবে।
ট্রাম্পের প্রস্তাব ও মাস্কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
কিন্তু বাইডেনের আয়কর বাড়ানোর বিপক্ষে ছিলেন ট্রাম্প। অপরদিকে ট্রাম্প-মাস্কের মধ্যে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মিল ইলন মাস্কের সামনে একটি নতুন দিক উন্মোচন করে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে ইলন মাস্ককে ‘কস্ট-কাটিং মন্ত্রী’ (খরচ কমানোর মন্ত্রী) হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। রাষ্ট্রীয় এই পদ মাস্ককে ‘কর আইনের’ এক গোপন ধারায় বিপুল পরিমাণ ট্যাক্স ছাড় পাওয়ার সুযোগ দিতে পারে। ইলন মাস্কের মতে যে সুবিধা প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক দিক থেকে সুবিধাজনক হতে পারে।
মাস্কের ট্রাম্প সমর্থন ও তার কারণ
ইলন মাস্কের ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন মূলত উল্লেখিত আয়করের বিধিনিষেধ থেকে মুক্তি পাওয়ার ইচ্ছার সাথে সম্পর্কিত। কারণ, ইলন মাস্ক মহাকাশ গবেষণায় আমেরিকার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। এবং তিনি মনে করেন ‘প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ’ আমেরিকার মহাকাশ গবেষণায় বাধা সৃষ্টি করছে।
মাস্কের ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
মাস্কের মতে, ‘ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া মানে মঙ্গল গ্রহকে ভোট দেওয়া।’ তিনি মনে করেন, আমেরিকার অতিরিক্ত সরকারি বিধিনিষেধের এই শ্বাসরোধী পরিস্থিতি আমরা থামাতে না পারি, তবে আমাদের বহুগ্রহে বসবাসকারী সভ্যতা হয়ে ওঠার স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের এক পোস্টে মাস্ক এমন এক অভিমত প্রকাশ করেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।
সূত্র: আল জাজিরা ও নিউ ইয়র্ক টাইমস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link