সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। তবে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট বরখাস্তের পর এক বক্তব্যে বিষয়টি মোটামুটি খোলাসা করেছেন। বরখাস্তের পরে গ্যালান্টের দেয়া সেই বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিম্নরূপ:
১. বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা
গ্যালান্ট তার বক্তব্যে বলেন, আমি ইসরায়েলের প্রত্যেক সক্ষম নাগরিকের সেনাবাহিনীতে অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত বলে মনে করি। অতীতে ধর্মপ্রাণ ইহুদিরা এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলেও, সম্প্রতি ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট এই অব্যাহতি বাতিল করে। গ্যালান্টের মতে, এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলকে আরও শক্তিশালী করবে।
২. গাজায় আটক ইসরায়েলিদের মুক্তি
বক্তব্যে গ্যালান্ট আরও বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় আটককৃত ইসরায়েলি নাগরিকদের দ্রুত মুক্তির জন্য তার জোরালো অবস্থানও তাকে বরখাস্ত করার কারণগুলোর একটি। অথচ কিছু ত্যাগ স্বীকার করে হলেও আমরা এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি!’
৩. আনুষ্ঠানিক তদন্তের দাবি
এছাড়া বক্তব্যে গ্যালান্ট বলেন, তিনি ৭ই অক্টোবরের পরবর্তী ঘটনাবলি নিয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন। কারণ তিনি মনে করতেন, ওই সময়ের ঘটনাবলির স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করবে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি ফোন কলে নেতানিয়াহু গ্যালান্টকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানান। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৩ মিনিট স্থায়ী এই ফোনালাপের ১০ মিনিট পরেই গ্যালান্টকে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের পর নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন এনে দেশটির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাতজকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেন এবং গিডিওন সায়েরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত করেন।
এদিকে নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বরখাস্তের ঘোষণার পর হাজার হাজার ইসরায়েলি রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে এবং নেতানিয়াহুর পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করে। গ্যালান্টের পক্ষে থাকা ব্যক্তিরা মনে করেন, গ্যালান্টের বরখাস্ত ইসরায়েলের সামরিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে নেতানিয়াহুর সমর্থকেরা বলেন, তারা নেতানিয়াহু ইসরায়েলের সামরিক শাসন পরিচালনায় সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে চান।
আবার অভ্যন্তরীণ এই সংকটের মধ্যেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় এবং পরবর্তীতে লেবাননে অভিযান চালিয়েছে, যা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
সূত্র: আল জাজিরা ও অন্যান্য সংবাদ সংস্থা