নিউজনেস্ট

মরক্কোর সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করছে চীন

মরক্কোর সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করছে চীন
মরক্কোর সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করছে চীন। ছবি: আল জাজিরা

আটলান্টিক পারের আফ্রিকান দেশ মরক্কোয় নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে চীনা বিনিয়োগ। সম্প্রতি চীনের ‘শানহা ইগুয়ান ব্রিজ রেলওয়ে’ কোম্পানী মরক্কোর রেললাইনের উন্নয়নে চলতি বছর ৫৬.২ মিলিয়ন ডলারের অধিক মূল্যের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি করেছে। যে চুক্তির মধ্যে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ পরিবহনকেন্দ্র মরক্কোর কেনিত্রা থেকে মারাকেশের মধ্যে উচ্চ-গতির ট্রেন লাইন সম্প্রসারণের প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

এছাড়া ২০৩০ সালে মরক্কোতে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজনকে সহজ করতে ঘন্টায় ৩০০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন ট্রেন প্রকল্প এবং মরক্কোর পর্যটন নগরী আকাদির থেকে দেশটির বন্দর নগরী ক্লাসাব্লাঙ্কার সাথে যোগাযোগের জন্য প্রস্তাবিত নতুন রেললাইন স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নেও বারবার চীনের নামই উঠে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে স্পষ্টত বুঝা যাচ্ছে আফ্রিকায় ধীরে ধীরে চীনের শক্তিশালী মিত্রতে পরিণত হচ্ছে মরক্কো। কারণ, বেশ কিছু প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ ছাড়াও চীনের সাথে মরক্কোর রয়েছে বিভিন্ন আঙ্গিকে সম্পর্ক।    

‘বেল্ট রোডের’ অংশীদার মরক্কো

২০১৭ সালে মরক্কো চীনের বহুজাতিক বানিজ্য প্রকল্প ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে’ যোগদান করে। এবং চীনের সাথে ১৫টি অংশীদারি চুক্তি স্থাপন করে। যার অধীনে ২০২১ সালে দুই দেশের মাঝে ৬.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি ব্যাটারি কারখানা নির্মাণের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে মরক্কোর বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন ক্ষমতা শক্তিশালী হবে। এবং দেশটিকে আফ্রিকার প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্ররূপে গড়ে তুলবে।

মরক্কো ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক

চীন-মরক্কোর মধ্যে বিভিন্ন আঙ্গিকে বিদ্যমান সম্পর্কের আরেকটি হল দুই দেশের মধ্যকার গতিশীল বানিজ্য সম্পর্ক। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মরক্কো ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭.৬ বিলিয়ন ডলার। যা চীনকে মরক্কোর তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত করে। মূলত মরক্কো চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনশিয়েটিভে’ প্রজেক্টে যুক্ত হওয়ার পর থেকে দেশটিতে ৫০% ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনও।

কৌশলগত শহর টাঙ্গিয়ার

পশ্চিম ইউরোপের নিকটবর্তী মরক্কোর টাঙ্গিয়ার নগরীতে কয়েক ডজন চীনা কোম্পানী রয়েছে। মরক্কো থেকে ইউরোপ মহাদেশের দূরত্ব কম হওয়ায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে স্বাধীন বাণিজ্যের চুক্তি থাকায় টাঙ্গিয়ার একটি উৎপাদনমুখী অঞ্চল হওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বে চীনা কোম্পানীগুলো বিকাশের এক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কারণ, এখান থেকে বাণিজ্য করলে চীন ইউরোপের অনেক নিষেধাজ্ঞাই এড়াতে পারে।

মরক্কো: ইউরোপে চীনের প্রবেশদ্বার

মরক্কোকে চীনের আফ্রিকান ও ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশের একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে ধরা যায়। মরক্কোর কৌশলগত অবস্থান ও অবকাঠামোর সুবিধা গ্রহণ করে আফ্রিকা ও ইউরোপের বাজারে চীন তার বিশাল বাণিজ্য কর্মকাণ্ড   পরিচালনা করে থাকে।

বিখ্যাত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক সাময়িকী দ্য ইকোনোমিস্টের ২০২৩ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, মরক্কো বর্তমানে চীনা বিনিয়োগের তৃতীয় বৃহত্তম আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, চীনের অন্য দুই বৃহত্তর বিনিয়োগের দেশ হলো মিশর ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত