নিউজনেস্ট

ট্রাম্পের আগমন কি আফগানিস্তানের জন্য সুফল বয়ে আনবে?

ট্রাম্পের আগমন কি আফগানিস্তানের জন্য সুফল বয়ে আনবে?
ট্রাম্পের আগমন কি আফগানিস্তানের জন্য সুফল বয়ে আনবে? ছবি: আল জাজিরা

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিজয় নিয়ে নানা মহলে চলছে বিশ্লেষণ আর আলোচনা।  ট্রাম্পের নতুন শাসনামলে কেমন হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি? এই প্রশ্ন বিশ্বের নানা দেশের জন্য শঙ্কার হলেও আফগানিস্তানের জন্য এটি বয়ে আনছে বিশেষ এক আগ্রহ। তবে বাস্তবে তালেবানের শাসনাধীন দেশটি নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান কেমন হতে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর এখনো অধরা।

ডেমোক্র্যাটদের পরাজয় কি নীরব স্বস্তি?

অনেকে মনে করছেন, হ্যারিসের পরাজয়ে তালেবানের মধ্যে নীরব স্বস্তি দেখা দিয়েছে। অবশ্য এক্ষেত্রে কারণটি খুবই স্পষ্ট, হ্যারিস একজন নারী। আর তালেবানের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, নারীর শিক্ষা ও চাকরি তাদের ঐতিহ্যবিরোধী। ডেমোক্র্যাটদের ব্যাপারে তালেবানের বিরূপ মনোভাবের আরও একটি কারণ আছে।

সদ্য গত বাইডেন প্রশাসন আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিউ ইয়র্কে রাখা ৭ বিলিয়ন রিজার্ভ ডলার তালেবানকে ফেরত দেয়নি। এসব কারণে তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানদের প্রতি তুলনামূলকভাবে একটু বেশি আগ্রহী।

নতুন অধ্যায়ের আশা

এদিকে এবার নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের পর তালেবানের পক্ষ থেকে পাওয়া গিয়েছে সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন বার্তা। যে বার্তায় আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রশাসন বাস্তববাদী পথে হাঁটবে এবং সম্পর্কের উন্নয়নে বাস্তবসম্মত ও কার্যকরী নীতি গ্রহণ পূর্বক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তালেবান নেতারা।

সম্প্রতি তালেবান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল কাহার বালখি বলেছেন, ‘আশা করা হচ্ছে, নতুন মার্কিন প্রশাসন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাস্তবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

তবুও সম্পর্কের পথে ধোঁয়াশা

অন্যদিকে তালেবানের পক্ষ থেকে সম্পর্ক উন্নয়নের সবুজ সঙ্কেত আসলেও ট্রাম্পের পদক্ষেপ নিয়ে কিন্তু রয়ে গেছে ধোঁয়াশা। কারণ, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের দুই ধরনেরই অবস্থান রয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টে বাইডেন যখন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছিলেন, ট্রাম্প তখন সেটিকে ‘আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম বড় পরাজয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

তিনি তখন বলেছিলেন, তার মতে এই প্রত্যাহার অবশ্যই শর্তসাপেক্ষ হওয়া উচিত ছিল। অপরদিকে আরেকবার আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছিলেন, এটি একটি ‘ভালো চুক্তি’। সেই সাথে তিনি এটিও বলেছিলেন, সেনা প্রত্যাহারের এই চুক্তি আরও আগে হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করতে এবং সেনাদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারত।

ফলস্বরূপ, ট্রাম্পের এই দ্বৈত মনোভাব, তালেবানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সম্পর্কে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, সে প্রশ্নের উত্তর এখন সকলেই খুঁজছে। তবে সেই নতুন সম্পর্ক শুধুই কি একটি কৌশলগত হিসাব হবে, নাকি এর পেছনে আরও গভীর কিছু লুকিয়ে আছে, তার উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত