সুইজারল্যান্ডে আগামী ১লা জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ‘বোরকা’ নিষিদ্ধের নতুন আইন কার্যকর হতে যাচ্ছে। যার আওতায় পাবলিক প্লেসে মুখ ঢাকার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসবে। এছাড়া আইনটি কার্যকর হওয়ার পর কেউ যদি নেকাব পরে কিংবা পর্দার উদ্দেশ্যে অন্য কোনভাবে মুখ ঢাকে, তবে তাকে প্রায় ১ হাজার ১৫০ ডলার, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডে এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শেষে মুখ ঢাকা নিষিদ্ধ করার পক্ষে রায় দেওয়া হয়। এখন সেই রায়ের ভিত্তিতেই ২০২৫ সালের শুরু থেকেই আইনটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
এদিকে সুইস সরকারের এই সিদ্ধান্তে দেশটির মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিম সংগঠনগুলোর পাশাপাশি অনেক সুইস ভোটার এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছেন। কারণ, বিতর্কিত এই আইনটি নাকি অল্প কিছু ভোটের ব্যবধানে পাস হয়েছিল, যা নিয়ে সুইস জনগণের মাঝে এখনও মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, নেকাব নিষিদ্ধের জন্য যে গ্রুপটি এই গণভোটের ব্যবস্থা করেছিল, তারা ২০০৯ সালে সুইজারল্যান্ডে নতুন মসজিদের মিনার নির্মাণ নিষিদ্ধের জন্যও প্রচারণা চালিয়েছিল।
তবে এই আইন কার্যকর হওয়ার পরও বিমানবন্দর, কূটনৈতিক ও দূতাবাসের এলাকা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে না। ধর্মীয় ও পবিত্র স্থানগুলোসহ স্বাস্থ্য, আবহাওয়া বা ঐতিহ্যগত কারণেও মুখ ঢাকার সুযোগ থাকছে। বিনোদনমূলক কাজে কিংবা বিজ্ঞাপনে মুখ ঢাকার প্রয়োজন হলে তাতেও কোনো বাধা নেই। এছাড়া ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্যও মুখ ঢাকা যাবে, তবে সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পূর্ব অনুমতি নিতে হবে।
এদিকে যদিও সুইজারল্যান্ডে খুব কমসংখ্যক মুসলিম নারী মুখ ঢাকা বোরকা পরেন, তবুও নতুন এই আইন দেশটির মুসলিম কমিউনিটির জন্য একটি কঠিন সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অনেকেই এটিকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা হিসেবে দেখছেন।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স