রাজধানী ঢাকার সাভার এলাকায় ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে দাফন করা ব্যক্তিটির পরিচয় আসলে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা হারিছ চৌধুরী ছিলেন। ডিএনএ পরীক্ষায় বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর সাভার থানার ওসি মো. জুয়েল মিয়া নিশ্চিত করেছেন যে লাশটি হারিছ চৌধুরীরই।
এ ব্যাপারে সাভার থানার ওসি মো. জুয়েল মিয়া বলেন, ‘ডিএনএ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আমরা তিন দিন আগে এটি আদালতে জমা দিয়েছি। লাশটি যে হারিছ চৌধুরীর, তা নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই।’ এদিকে আদালতের প্রক্রিয়ার বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) কামারুন মুনিরা জানান, ‘এটি আদালতের বিষয়, তাই আমাদের পক্ষে এ নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই। আদালতই বিষয়টির নিষ্পত্তি করবেন।’
অপরদিকে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি গণমাধ্যমের মাধ্যমে এ তথ্য পেয়েছেন। তবে এখনো তার কাছে আইনিভাবে কোনো নিশ্চিতকরণ আসেনি। সামিরা বলেন, ‘পরবর্তীতে এ বিষয়ে আইনজীবী উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করবেন।’
হারিছ চৌধুরীর পরিচয় বদলের ইতিহাস
উল্লেখ্য, হারিছ চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ‘হারিছ চৌধুরী’ নাম পাল্টে হয়ে যান ‘প্রফেসর মাহমুদুর রহমান’।
২০২১ সালে তিনি মারা গেলে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামেই তাকে ঢাকার সাভারে দাফন করা হয়। তবে তার প্রকৃত পরিচয় জানতে মেয়ে সামিরা চৌধুরী এ বছর ৫ সেপ্টেম্বর বাবার পরিচয় নিশ্চিত করতে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আদালত এ আবেদন গ্রহণ করে তার লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেন।
গত ১৬ অক্টোবর সিআইডির নির্দেশনায় সাভার থেকে হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টে ইতিবাচক ফল আসার পর হারিছ চৌধুরীর পরিচয় চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হয়। বর্তমানে এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আদালত বিষয়টির আইনি নিষ্পত্তি করবে বলে জানানো হয়েছে ।