নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের ১০০ দিনের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিবেশ রক্ষায় একাধিক কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা কার্যকর করতে নেওয়া হয়েছে যুগান্তকারী ব্যবস্থা।
পলিথিনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স
দেশব্যাপী পলিথিন নিষিদ্ধ করতে সরকারের উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২৬ হাজার কেজির বেশি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। শপিং মল ও কাঁচাবাজারে পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করার জন্য কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ ও অন্যান্য পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
আকাশমণি (ইউক্যালিপটাস) রোপণে নিষেধাজ্ঞা
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছ হিসেবে পরিচিত আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের চাষ ও রোপণ বন্ধে সরকারের নতুন নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে। এই গাছগুলো মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয় এবং জলের স্তর নিচে নামিয়ে আনে। পরিবেশবান্ধব ও উপযোগী গাছ রোপণের মাধ্যমে ক্ষতি পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
হর্ন মুক্ত এলাকা ঘোষণা
শব্দদূষণ রোধে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকাকে হর্ন মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাকে ২০২৫ সালের মধ্যে নীরব এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ
সচিবালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি অফিসে সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প পণ্যের ব্যবহারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, যা দেশের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
বন্যপ্রাণী ও বন সংরক্ষণ
সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করে প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থান রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে বনাঞ্চল সংরক্ষণ এবং বনভূমি পুনরুদ্ধারে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাহাড় ও টিলা কাটার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই উদ্যোগগুলো টেকসই করতে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। জনসচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এদিকে ২০৪০ সালের মধ্যে সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।