তারিখ প্রদর্শন
লোগো

ইউরোপীয় মুসলিম সম্প্রদায় বর্তমানে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও ঘৃণার মুখোমুখি। সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণা ও প্রতিবেদন এই উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরেছে। ধর্ম, জাতিগত পরিচয় এবং অভিবাসী পটভূমির কারণে মুসলিমগণ ইউরোপের সমাজে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

মুসলিম জনগোষ্ঠীর আকার

ইউরোপীয় ইউনিয়নে মুসলিমগণ দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে বিদ্যমান। পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০১৬ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, এই অঞ্চলে মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ২৬ মিলিয়ন, যা মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ। ফ্রান্স ও জার্মানিতে মুসলিম জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

বৈষম্যের মূল কারণ

গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে যে, মুসলিমগণ কেবলমাত্র তাদের ধর্মের কারণে নয়, বরং তাদের ত্বকের রঙ, জাতিগত পরিচয় এবং অভিবাসী হওয়ার কারণে লক্ষ্যবস্তু হচ্ছেন। বৈষম্যের এই চিত্র শুধু সামাজিক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নয়; বরং কর্মক্ষেত্র ও দৈনন্দিন জীবনেও স্পষ্ট।

বৈষম্যের শীর্ষস্থানীয় দেশ

বৈষম্যের দিক থেকে অস্ট্রিয়া সবচেয়ে এগিয়ে। যেখানে ৭১ শতাংশ মুসলিম বৈষম্যের কথা উল্লেখ করেছেন। এর পরেই রয়েছে জার্মানি (৬৮ শতাংশ) এবং ফ্রান্স (৩৯ শতাংশ)। অন্যদিকে স্পেন ও সুইডেনে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যের হার ইউরোপের মধ্যে তুলনামূলকভাবে কম।

জরিপের তথ্য

২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৩টি দেশে পরিচালিত এক জরিপে ৯,৬০০ জন অংশ নেন। জরিপ অনুযায়ী, প্রায় অর্ধেক মুসলিম তাদের দৈনন্দিন জীবনে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

ঘৃণার তীব্র বৃদ্ধি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার সংস্থা তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলেছে, মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও বৈষম্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ‘তুফানুল আকসা অপারেশনের’ পর মুসলিমদের প্রতি ঘৃণার মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

ইউরোপে মুসলিমদের প্রতি ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও ঘৃণার চিত্র উদ্বেগজনক। এ পরিস্থিতি সামাজিক সাম্য ও মানবাধিকারের মূল চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ইউরোপের নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *