পাকিস্তানের লাহোর শহরে বায়ুদূষণ চরম আকার ধারণ করেছে, যা শহরবাসীর জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। প্রতিদিন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ শ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, লাহোরকে বসবাসের অযোগ্য বলে আখ্যা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিপর্যস্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা
লাহোরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দূষণের কারণে রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। জিন্নাহ হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই গলা ও বুকে সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসকগণ সতর্ক করেছেন, এই সংকট কোভিড-১৯ মহামারির চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠছে! কারণ, রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দূষণের মাত্রা অপ্রতিরোধ্য
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় লাহোর অন্যতম, যেখানে বায়ুদূষণের মাত্রা ১০৬৮-এ পৌঁছেছে। এই মাত্রা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শহরের বাতাসে অতিরিক্ত দূষণ কণা থাকার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুস্থতা বেড়ে যাচ্ছে।
সরকারের জরুরি পদক্ষেপ
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাকিস্তান সরকার লাহোরে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্কুল ও সরকারি প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সংকট সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ প্রয়োজন।
জনজীবনে প্রভাব
বায়ুদূষণের কারণে লাহোরের জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকেই শহর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার কথা ভাবছেন। তবে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হয়ে উঠবে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।
লাহোরের বর্তমান পরিস্থিতি শুধু স্থানীয় নয়, বৈশ্বিক পর্যায়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই কেবল এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।
