আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশজুড়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সাম্প্রতিক এক উদ্যোগে সরকার প্রায় ৩০ লাখ একর দখলকৃত ভূমি পুনরুদ্ধার করেছে, যা জাতীয় সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী করার এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইসলামি আমিরাত দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। মার্কিন দখলদারিত্ব এবং পূর্ববর্তী প্রশাসনের সময়কালে দেশের বিস্তীর্ণ জমি অবৈধভাবে দখল হয়েছিল। বর্তমান সরকার সেই দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করছে।
সম্প্রতি রাজধানী কাবুলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এসব জমি অবৈধভাবে দখল করা হয়েছিল। এ উদ্যোগ সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি রক্ষা এবং দখলদারিত্বের প্রবণতা নির্মূল করা।
দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধারে ‘দখলকৃত সরকারি জমি পুনরুদ্ধার কমিটি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই কমিটি কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে অবৈধ দখলদারদের আইনের আওতায় আনছে এবং পুনরুদ্ধার করা জমি সরকার ও প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছে।
আফগান সরকারের এই উদ্যোগ শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়, বরং একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে। একইসঙ্গে, এটি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি অংশ। দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করে তা প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সরকার জাতীয় সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে চায়।
ইসলামি আমিরাতের এ উদ্যোগ প্রমাণ করে আফগান সরকার একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি রক্ষা, দখলদারিত্ব রোধ এবং আইন ও শৃঙ্খলার শাসন প্রতিষ্ঠা—সব মিলিয়ে এটি আফগানিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
বর্তমান সরকার জানিয়েছে, দখলকৃত ভূমি পুনরুদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প। এর লক্ষ্য শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধশালী আফগানিস্তান গড়ে তোলা।
সূত্র: হুররিয়াত রেডিও