নিউজনেস্ট

বিজেপির নির্বাচন প্রচারণায় ইসলামোফোবিয়ার অভিযোগ

বিজেপির নির্বাচন প্রচারণায় ইসলামোফোবিয়ার অভিযোগ। ছবি : গেটি

ভারতে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সম্প্রতি একটি অনলাইন নির্বাচনী প্রচার ভিডিও প্রকাশ করেছে যা দেশব্যাপী বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভিডিওটি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

ঝাড়খণ্ড রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার এই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। এতে দেখানো হয়েছে, মুসলমানদের একটি দল বিরোধী দলের একজন সমর্থকের বাড়িতে প্রবেশ করছে। ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, এক নারী তাদের উপস্থিতিতে বিরক্তি প্রকাশ করছেন এবং মুসলিম শিশুদের আসবাব নোংরা করতে দেখা যায়। পাশাপাশি, হিজাব ও নিকাব পরা নারীদের বাড়ির ওপর কর্তৃত্ব করার দৃশ্য হয়েছে।

এই ভিডিও প্রকাশের পর থেকেই দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা বিজেপিকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

শিক্ষাবিদ অশোক সুইন ভিডিওটিকে ‘ইসলামোফোবিয়ার স্পষ্ট উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এক্স (পূর্বে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে প্রশ্ন তোলেন, ‘ভারতীয় নির্বাচন কমিশন কেন এমন উসকানিমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’

জম্মু ও কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির নেত্রী মেহবুবা মুফতি এই ভিডিওটিকে ‘লজ্জাজনকভাবে সাম্প্রদায়িক’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘বিজেপির এই ধরনের প্রচারণা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর পরিপন্থী।’

এক্সে তার পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘কাশ্মীরি নেতৃত্ব যারা ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাদের জন্য এই ধরনের প্রচারণা দুঃখজনক এবং চিন্তার বিষয়।’

বিতর্ক ছড়ানোর পর ভারতীয় নির্বাচন কমিশন (ইসি) রোববার ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। তারা জানায়, ভিডিওটি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। ঝাড়খণ্ডের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে দ্রুত ভিডিওটি অপসারণ করা হয়।

বিজেপির নির্বাচনী প্রচার ইতিপূর্বেও বিতর্কিত হয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় তারা একটি কার্টুন প্রকাশ করে, যেখানে দাবি করা হয়েছিল, কংগ্রেস মুসলিমদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করছে। সেই সময়ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হয়।

বিজেপির অতীত প্রচারণায় মুসলমানদের ‘আক্রমণকারী’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। তাদের বক্তব্যে প্রায়শই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিভাজনমূলক সুর শোনা যায়। যদিও আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখে এই ধরনের অনেক প্রচারণা পরবর্তীতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত