ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি আবার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসী বহিষ্কার কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ কেবল যুক্তরাষ্ট্রে নয়, সারা বিশ্বের অভিবাসন নীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা: বহিষ্কারের ম্যান্ডেট
ট্রাম্প এবার ক্ষমতায় ফিরছেন এমন একটি অবস্থায়, যেখানে ট্রাম্পের কাছে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের জন্য প্রায় সম্পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে। লক্ষ লক্ষ অভিবাসী, যারা কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, এবং বাইডেন প্রশাসনের তুলনামূলক উদার নীতির আওতায় গত চার বছরে প্রবেশকারী আরও লক্ষাধিক মানুষ, এই পরিকল্পনার আওতায় পড়বেন।
ইডওয়ার্ড অ্যালডেন, ওয়েস্টার্ন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, মন্তব্য করেছেন,‘যদি ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা সফল হয়, তবে এটি অভিবাসন নীতিকে পুরো একটি প্রজন্মের জন্য নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করবে।’
অভিবাসন নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
ট্রাম্পকে সমর্থনকারী অনেক ধনী ব্যক্তি নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল। তারা কর্মস্থলে অভিযান এবং অবৈধ অভিবাসীদের আটক করার প্রক্রিয়াকে বাধা দিতে পারে।
এতে প্রশাসনকে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে:
• তারা কি শ্রম ঘাটতি পূরণের জন্য আরও শরণার্থী গ্রহণ করবে?
• নাকি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান বজায় রাখবে?
বিশ্বজুড়ে প্রভাব: অভিবাসীদের প্রতি কঠোরতা বাড়বে?
যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের গণবহিষ্কার শুরু করলে, বিশ্বের অন্যান্য জনগণতান্ত্রিক সরকারও অনুরূপ কঠোর নীতি গ্রহণ করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে অভিবাসীদের স্বাগত জানানোর প্রতীক হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ একটি ‘ভয়ংকর বার্তা’ পাঠাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশেষ করে, যখন বিশ্বজুড়ে সংঘাত, সহিংসতা এবং অর্থনৈতিক পতনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, তখন অভিবাসন প্রশ্নটি আরও রাজনৈতিক হয়ে উঠছে। আজকের দিনে এই সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ছুঁয়েছে, যা গত এক দশকের তুলনায় দ্বিগুণ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্বে ছড়াবে পরিবর্তন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি বৈশ্বিক অভিবাসন নীতিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করবে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি কঠোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
অভিবাসন বিষয়টি মানবিক সংকট থেকে এখন ক্রমেই রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হয়ে উঠছে।২০২৫ সাল সম্ভবত সেই বছর হবে, যখন অভিবাসন নিয়ে বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি চিরতরে বদলে যাবে।
সূত্র: আল জাজিরা