ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইয়েদিয়ত আহারোনত সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে দেশটির সেনাবাহিনীর ভেতরে ক্রমবর্ধমান মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যুদ্ধের মানসিক চাপের কারণে হাজার হাজার সেনা চিকিৎসা নিচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে একটি “বড় দুর্যোগ” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আত্মহত্যার ঘটনা: সেনাবাহিনীর প্রকৃত সংখ্যা গোপন
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা ও লেবাননে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ অভিযানে অংশ নেওয়া অন্তত ছয়জন সেনা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আত্মহত্যা করেছেন। তবে সেনাবাহিনী আত্মহত্যার প্রকৃত সংখ্যা এবং আত্মহত্যার চেষ্টার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, এ বছরের শেষ নাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এখনো তা গোপন রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পত্রিকাটি।
হাজারো সেনার মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন
প্রতিবেদনে সামরিক বিশেষজ্ঞদের বরাতে জানানো হয়েছে, যুদ্ধ শেষে যখন সেনারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবেন, তখন মানসিক চাপের প্রকৃত চিত্র আরও স্পষ্ট হবে।
এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “গত কয়েক সপ্তাহে, বিশেষ করে লেবানন থেকে বেশিরভাগ সেনা ফিরে আসার পর এবং গাজায় যুদ্ধ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চিকিৎসার জন্য সেনাদের আবেদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।”
এই চিকিৎসা প্রার্থীদের সংখ্যা হাজারেরও বেশি, যাদের অধিকাংশই নবীন সেনা। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সেনাবাহিনী চিকিৎসার পরিধি বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রিজার্ভ সেনাদের সাড়া দিতে অস্বীকৃতি
এছাড়া, সেনাবাহিনী আরও একটি সংকটে পড়েছে। রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে যারা যুদ্ধের জন্য নাম নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের একটি বড় অংশ সেনাবাহিনীর ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাকে সাড়া দেওয়ার হার ১০ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে। এতে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যার ঘাটতি পূরণে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
সেনাবাহিনীর ঘাটতি পূরণে চ্যালেঞ্জ
সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে, সদস্যসংখ্যার অভাব পূরণে তারা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। ঘাটতি মেটাতে এবং সেনাদের মানসিক সংকট দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ইয়েদিয়ত আহারোনত-এর এই প্রতিবেদন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভেতরে গভীর সংকটের চিত্র তুলে ধরেছে। যুদ্ধের প্রভাব শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও যে কতটা ধ্বংসাত্মক হতে পারে, তা স্পষ্ট।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link