পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। রবিবার শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে তার সমর্থকদের পরিকল্পিত বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে।
ইসলামাবাদে প্রবেশের মহাসড়ক এবং শহরের প্রধান সড়কগুলো কনটেইনার দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। দাঙ্গা প্রতিরোধে সজ্জিত বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইসলামাবাদ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ।
এদিকে ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘নেটব্লকস’ জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরুর আগে হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজিং পরিষেবায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ইমরান খান, যিনি বর্তমানে কারাবন্দি, গত সপ্তাহে কারাগার থেকে তার সমর্থকদের দেশব্যাপী পদযাত্রা এবং ইসলামাবাদে সমাবেশের আহ্বান জানান। পিটিআই দলের দাবি, সরকার অক্টোবরে একটি বিতর্কিত আইন পাস করেছে, যা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দলটি আরও অভিযোগ করেছে তাদের নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গত ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।
পিটিআই দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আলি আমিন গ্যান্ডাপুর, যিনি খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী, বৃহৎ গাড়িবহর নিয়ে ইসলামাবাদে প্রবেশের পরিকল্পনা করেছেন। তিনি প্রতিবাদকারীদের ইসলামাবাদের রেড জোন এলাকায় জড়ো হতে আহ্বান জানিয়েছেন। রেড জোন এলাকায় পার্লামেন্ট ভবন, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর, বিদেশি দূতাবাসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যালয় রয়েছে।
পিটিআই দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের প্রধান ইমরান খানসহ সব বন্দি নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে এবং সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। দলটি চলতি বছরের নির্বাচনকে ‘ভোট কারচুপি’ বলে অভিহিত করেছে।
ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দি। ২০২২ সালে পার্লামেন্টের একটি ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিনি দুর্নীতি ও সহিংসতায় উসকানির মতো একাধিক মামলার মুখোমুখি। তবে ইমরান খান ও তার দল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
ইসলামাবাদে এমন কঠোর নিরাপত্তা এবং চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতিচ্ছবি। বিক্ষোভ সফল হলে দেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে।
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা