ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে সন্ত্রাসী হামলায় তিন জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হওয়ার দাবি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ দাবির সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আজ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। তথাকথিত ‘সাত কলেজ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তিন শিক্ষার্থীর প্রাণ কেড়ে নেয় এবং শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে আহত করে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী নয়, বরং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। এরা শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের পরিচয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মদদে এই হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীরা কলেজের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত মালামাল লুট করে। এছাড়া অধ্যক্ষের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে।
কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, হামলার পর বারবার প্রশাসনের সহায়তা চাওয়া হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছে:
১. হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
২. শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কলেজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।
৩. লুটকৃত সম্পদ উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত নথি পুনরুদ্ধার করা।
কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহাবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র এবং পিস্তল ব্যবহার করে। এতে অনেকেই হতাহত হয়েছে। তবে নিহতদের সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত নয়।”
কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর জানান, “নিহত তিন শিক্ষার্থী সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।”
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের প্রতি ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “আমরা শিক্ষার পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।”
নৃশংস এ হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থায় কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।