বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের সাবেক অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক ফরহাদ মজহার।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টে চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চেয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তার স্ট্যাটাসটি নেটদুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পাঠকদের জন্য পোস্টের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরা হলো:
“বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল মানুষের নাগরিক ও মানবিক অধিকার রক্ষা করুন। আত্মঘাতী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ করুন।
হিন্দু মানেই দিল্লির দালাল কিংবা বিজেপির এজেন্ট—এ ধরনের ঘৃণাবোধক সাম্প্রদায়িক ট্যাগিং থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভাজন নয়, বরং ঐক্য প্রয়োজন।
জুলাই ২০২৪-এর বিপ্লবের পর দেশের রাজনীতি ও শাসন কাঠামোয় পরিবর্তনের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আমাদের মধ্যে শুভবুদ্ধি জাগ্রত হোক। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।”
গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক।
ফরহাদ মজহারের পোস্টটি দ্রুত ভাইরাল হয়। অনেকে পোস্টে সমর্থন জানালেও বিপরীত মতামতের সংখ্যাও কম নয়। কয়েকজন মন্তব্য করেছেন, “ইসকনকে দ্রুত নিষিদ্ধ করা হোক। তারা দেশের জন্য হুমকি।”এদিকে ফরহাদ মজহারের সমর্থকরা মনে করছেন, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য জরুরি। অন্যদিকে, বিরোধীরা তার বক্তব্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তি নিয়ে নেটিজেনদের এই মিশ্র প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।